দিনাজপুরঃ ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে এবার একসঙ্গে প্রায় দুই লাখ মুসল্লি ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এ জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা।
মেঘ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল ৭টা থেকে মুসল্লিরা সমবেত হতে শুরু করেন এ ঈদগাহে। ঠিক সাড়ে ৮টায় শুরু হয় নামাজ। ইমামতি করেন মাওলানা শামসুল আলম কাশেমী। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে করা হয় বিশেষ মোনাজাত।
বৃহৎ এই ঈদের জামাতকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি ছিল কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি। মাঠের আশপাশে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও ছিলেন তৎপর।
জামাতে অংশ নেন- বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহম্মেদ, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে ঈদের জামাতে আসা সবুজ ইসলাম বলেন, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ও দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করে খুব ভালো লাগল। জীবনে প্রথম লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে নামাজ পড়তে পেরে ভালো লাগছে। এর আগে এই মাঠে নামাজ আদায় করার ইচ্ছে ছিলো, কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। এবার ঈদের নামাজের জন্য বিশেষ ট্রেন ছিল। সেই ট্রেনে এসে নামাজ আদায় করলাম। আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগছে।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, বিশাল এই জামাতে দিনাজপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেছেন। ঈদগাহ মাঠে নিরাপত্তার বিষয়ে বরাবরের মতো জোর দেওয়া হয়েছে। ঈদগাহজুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, প্রথমবারের মতো মুসল্লিরা ঈদগাহ মাঠে নামাজে অংশগ্রহণের জন্য দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ১৯টি প্রবেশপথ দিয়ে সকাল ৭টা থেকে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ করেন।
নামাজ শেষে হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আয়তনের দিক দিয়ে এটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ। এর আয়তন প্রায় ২২ একর। এবার দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার প্রায় দুই লাখের বেশি মুসল্লি এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। কয়েক দিন থেকে টানা বৃষ্টি। আজ সকাল থেকেও আবহাওয়া খারাপ থাকায় দূর-দূরান্তের মুসল্লির উপস্থিতি কম হয়েছে এবার।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থায়নে এ মাঠের সুন্দর মিনারটি নির্মিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটিকে আরও সুন্দর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বুইউ