ঢাকাঃ অমর একুশে বইমেলা আর ফেব্রুয়ারি যেন একই সুতোয় বাঁধা। কিন্তু গত বছর করোনাভাইরাসের কারণে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা অনুষ্ঠিত না হয়ে শারীরিক উপস্থিতিতে মেলা শুরু হয় ১৮ মার্চ থেকে। তবে আগামী বছর আগের নিয়ম অনুযায়ী ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা।
আর এবারের বইমেলার সার্বিক খরচ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন প্রকাশকরা।
সোমবার বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২২: আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রকাশকরা এ আবেদন জানান।
এতে বক্তারা বলেন, গত দুই বছর করোনার প্রভাবে সৃজনশীল প্রকাশকরা চরম আর্থিক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। গত বছর বইমেলায় তারা সর্বোচ্চ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু প্রকাশকরা করোনাকালীন কোনো প্রণোদনা পাননি। সে কারণে আগামী কয়েকটি বইমেলার পুরো খরচ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলা নতুন আঙ্গিকে প্রকাশকবান্ধব করার আহ্বান জানান প্রকাশকরা।
তারা দাবি তুলে বলেন, বইমেলার সময়কাল প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা ও ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা, স্টলের ভাড়া কমিয়ে আনা, মেলায় খাবারের দোকানগুলো প্রবেশপথের সামনে না রাখা, প্রবেশপথ বাড়ানো এবং গাড়ি রাখার স্থান নির্দিষ্ট করা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থায়ী মেলার কাঠামো গড়ে তোলা, বইয়ের কমিশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়া, বইমেলার অবকাঠামো মেলা শুরুর আগে পুরোপুরি প্রস্তুত করা, মৌসুমি প্রকাশকদের বইমেলায় স্থান না দিয়ে শুধুমাত্র মানসম্মত পেশাদারি প্রকাশকদের অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে বইমেলার মাত্রাতিরিক্ত পরিসর কমাতে হবে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা প্রকাশকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, যেকোনোভাবেই লেখক ও প্রকাশকবান্ধব করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে, এর পাশাপাশি প্রকাশকদের পেশাদার হয়ে ওঠবার তাগিদ দেন তিনি। পেশাদারিত্ব না এলে সরকারের হাজার প্রণোদনা দিয়েও প্রকাশনা শিল্পের উন্নতি হবে না।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, যতদিন একজন প্রকাশক নিজের টাকায় বই প্রকাশ না করবে ততদিন একজন লেখকের বই প্রকাশ করা উচিত নয়। নিজের টাকায় মানহীন বই প্রকাশের কোনো মূল্য নেই।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ বলেন, বইমেলা প্রতিবছরই তার পূর্বের মানকে ছাড়িয়ে যায়। আমরা বইমেলাকে অনেকটাই আধুনিক করে তুরতে পেরেছি। আগামীতে এ বইমেলাকে সবাই মিলে আরও গোছানো, পাঠক-প্রকাশকবান্ধব করে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির নির্বাহী পরিচালক মনিরুল হক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্ত প্রকাশনীর প্রকাশক নিশাত জাহান রানা, অনুপম প্রকাশনীর মিলন কান্তি নাথ, তাম্রলিপির এ কে তরিকুল ইসলাম রনি, কথাপ্রকাশের জসীম উদ্দিন, ঝিঙেফুল প্রকাশনীর গিয়াসউদ্দিন খান প্রমুখ।
আগামীনিউজ/নাসির