Dr. Neem on Daraz
Victory Day

শংকা


আগামী নিউজ | দেওয়ান পলাশ প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০২১, ০৬:৪৭ পিএম
শংকা

ছবিঃ সংগ্রহিত

ঢাকাঃ আর একটু পর সন্ধ্যা নামবে ।বগুড়া শহরের চারমাথা ।চারমাথা এলাকায় এককাপ চা না খেয়ে শহরের সাতমাথায় যেতে  মন চায় না ।আস্তে আস্তে চায়ের দোকানে চলে এলাম । দোকানের সামনে রাখা একটি ব্রেঞ্চে বসে চা পান করছি । চায়ে দু তিন  চুমুক দিতেই পেছন থেকে কে যেন বলে উঠল ' "ভাইয়া, প্লিজ একটু শুনবেন কি ? " পেছন ফিরে তাঁকিয়ে দেখি আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে এক অচেনা তরুনী । তাকে  বললাম, আমাকে বলছেন ? তরুনী বলল হ্যাঁ আপনাকেই বলছি । এর আগে এই তরুনীকে কখনও দেখেছি বলে মনে হয়না । চেহেরা অনেক মার্জিত । কথা বলার ঢংটাও  বিনম্র। চেহেরায় সৌন্দর্যের কারুকাজ ।পোষাকেও অনেক রুচিশীল ।

কিছু না বলে চেঁয়ে রইলাম দু এক মিনিট ।

তারপর বললাম, কিছু বলবেন কি ? তরুনী বলল, এ দিকে একটু এগিয়ে আসেন, প্লিজ । চা এর কাপ রেখে তার দিকে এগিয়ে আসলাম ।এবার বললাম, কি বলতে চান ? তরুনী অনেকটা ইতস্তিত হয়ে বলল, ভাইয়া আপনার মোবাইল ফোনটা কি একটু দিবেন ? আমি বললাম, কেন ?

উত্তরে বলল, আমি গাইবান্ধা  থেকে এসেছি । আমার ভগ্নিপতি সিরাজগঞ্জে চাকুরী করতেন । ক'দিন আগে ট্রান্সফার নিয়ে বগুড়া এসেছেন । আমার বোনকে নিয়ে নতুন বাসায় উঠেছেন । আগামীকাল আযিযুল হক কলেজে অর্নাস ভর্তি পরীক্ষা ।বাসে বসে দুলাভাইকে ফোন দিয়েছিলাম।  উনি বলেছেন, তুমি বাস থেকে চারমাথা নামবে। আমি চারমাথা অপেক্ষা করব । হঠাৎ করে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেছে । বাস থেকে নেমে আর উনাকে ফোন দিতে পারিনি । ইতিমধ্য, সন্ধ্যা হতে চলল তবুও দুলাভাইয়ের দেখা নেই ।তাছাড়া  নতুন বাসাটাও চিনিনা । আমি অনেক অসহায় হয়ে পড়েছি ।কাউকে বলতেও পারছিনা কিন্তু আপনাকে দেখে ভাল মানুষ বলে মনে হল বলেই বলছি ।

আমি বললাম, মোবাইল ফোনের দোকানে গিয়ে ফোন করলেই তো পারতেন ।উত্তরে তরুনী জানাল, দুলাভাইয়ের ফোন নম্বর তার মুখস্ত নেই ।সেজন্য মোবাইলের দোকানে গিয়ে ফোন করতে পারেনি ।
এবার তরুনী বলল, যদি আপনার ফোনটা দেন তাহলে ফোনে সিমকার্ডটা উঠিয়ে একটা কল করতে পারি ।

আমি অনেক দ্বিধায় পড়লাম ও কি সত্য বলছে নাকি প্রতারক চক্রের সদস্য! অবশেষে মনে হল, মেয়েটি হয়ত প্রতারণা চক্রেরই সদস্য হবে । মেয়েটিকে এড়িয়ে আসার ইচ্ছে হল । মিথ্যে করে বললাম, সামনের দোকানে কয়েকটা টাকা পাবে।  টাকাটা দিয়ে এখানে আসছি ।মেয়েটি বলল, ঠিক আছে ।

টাকা পরিশোেধর নাম করে বাড়ীর পথে  নওগাঁগামী বাসে উঠে পড়লাম । কিছুক্ষণ পর বাস ছেড়ে দিল । জানালার পাশে বসেছি । হালকা বাতাস । মেয়েটির কথা খুব বেশি মনে হতে লাগল । ও যদি সত্যই বিপদে পড়ে তাহলে তো আমি উপকার না করে অনেক অন্যায় করে ফেলেছি ।এখন কেন জানি মনে হচ্ছে,মেয়েটি বুঝি সত্যই বিপদে পড়েছিল । ও কি তার দুলাভাইয়ের খোঁজ পেয়েছে, নাকি এখনও সন্ধ্যার আঁধারে দাড়িয়েঁ আছে দুলাভাইয়ের অপেক্ষায়?

মনটাকে কিছুতেই হালকা করতে পারছিনা । জানালার পাশে বসে হালকা বাতাসে গা কেমন ঘেমে যাচ্ছে।

ইস ! মেয়েটা যে এখন কি অবস্থায় আছে ।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে