ঢাকাঃ প্রোটিন বেশি গ্রহণ করলে বৃক্কে হতে পারে পাথর; কম হলে ক্ষয় হবে পেশির।
পছন্দের খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ওজন কমানোর বিষয়টা বেশ চমৎকার। তবে মুশকিল হয়ে যায় প্রোটিন গ্রহণের সঠিক মাত্রাটা কেমন হবে, তা নির্ণয় করা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্সটিটিউট অফ মেডিসিন’য়ের ‘ডায়েটেরি রেফারেন্স ইনটেক (ডিআরআই)’ অনুসারে, প্রাপ্ত বয়স্কদের দৈনিক ২ হাজার ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। এর মধ্যে থাকতে হবে ৫০ গ্রাম প্রোটিন।
এর বেশি পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করা প্রয়োজনের অতিরিক্ত যা ক্ষতিকর হতে পারে।
‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ জার্সি’র ‘হেল্থ ডায়নামিক্স’য়ের নিবন্ধিত পথ্য ও পুষ্টিবিদ টিনা মারিনাচ্চো ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে- শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য সাধারণত একজন মানুষের প্রতি কেজি ওজনের ০.৮ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তবে যারা শারীরিকভাবে বেশি কর্মক্ষম তাদের প্রতি কেজি ওজনের জন্য বাড়তি ২ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন যা তাদের চর্বিহীন শরীরের ভর নিয়ন্ত্রণ করে।
তবে এই পরিমাণ অতিক্রম করলে স্বাস্থ্যে পরিণতি মারাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
“অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ মানে বেশি ক্যালরি গ্রহণ যা ওজন বাড়ায় ও বৃক্কে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়” বলেন, মারিনাচ্চো।
এর ব্যাখা দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, “যারা বেশি প্রোটিন গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে সবজি গ্রহণের প্রবণতা কম থাকে, যার ফলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়।”
এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, “অনেকে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ ডায়েট অনুসরণ না করেও ভুল বশত দৈনিক প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, সতর্ক থাকা জরুরি।”
“প্রোটিনের পরিমাণ গণনা করার ক্ষেত্রে, আমরা প্রায়শই মাংস, মাছ, হাঁস-মুরগি এবং মটরশুঁটি নিয়ে ভাবি। তবে এটি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ যে শস্যের প্রতি পরিবেশনে ৩ গ্রাম ও শাকসবজিতে প্রতি পরিবেশনে ২ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তাই বেশিরভাগ যারা সুষম ডায়েট গ্রহণ করে তারা ‘যথেষ্ট’ পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করে।”
মারিনাচ্চো ব্যাখ্যা করেছেন যে, কিডনি অর্থাৎ বৃক্কের রোগ-সহ কিছু বিশেষ রোগীদের প্রোটিন গ্রহণের ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
তবে, এর কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। অনেকেই নির্ধারিত পরিমাণের তুলনায় অধিক প্রোটিন গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছেন।
‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন’য়ে প্রকাশিত ২০০৩ সালের গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে মারিনাচ্চো বলেন, “নারীদের হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে উচ্চ প্রোটিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।”
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্রেইটন ইউনিভার্সিটি, স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের করা এই গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৬ থেকে ৭৭ বছর বয়সিদের মধ্যে যারা বেশি প্রোটিন অর্থাৎ দৈনিক ৭২ গ্রাম গ্রহণ করেন তাদের ক্যালসিয়াম ও হাড় ক্ষয়ের মাত্রা অন্যান্যদের তুলনায় কম থাকে।
খুব অল্প পরিমাণে প্রটিন গ্রহণ দুর্বলতা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নাশ, পেশি হ্রাস, হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা ও শ্বাসজনিত রোগ সৃষ্টি করতে পারে বলে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মাতৃপুষ্টি পরামর্শক ‘মম্ লাভাস বেস্ট’য়ের ম্যারি উইর্টজ।