গলা ব্যথায় আরাম পেতে ব্যবহার করা যেতে পারে নানান প্রাকৃতিক উপাদান।বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গলা ব্যথা আতঙ্কের উপসর্গ। তবে গলা ব্যথার সঙ্গে আমরা বহু আগে থেকেই পরিচিত। আর গলা ব্যথা হলেই যে আপনি ‘কোভিড-১৯’য়ে আক্রান্ত এমনটা নয়।গলা ব্যথার সঙ্গে শুকনো কাশি থাকলে বুঝতে হবে আপনি কোনো ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন, যা সময় মতো ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা বড় হতে পারে।স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনের আলোকে জানানো হলো গলা ব্যথার ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে কিছু পরামর্শ।
লবণ পানিতে গার্গল
গলা থেকে জীবাণু দূর করার এই পদ্ধতির সঙ্গে সবাই কমবেশি পরিচিত, আর তা বেশ কার্যকরও বটে। তবে এর সুফল পেতে হলে টানা তিন থেকে চার দিন গার্গল করতে হবে। যদিও এই পদ্ধতিতে রোগজীবাণু বিশেষ করে করোনাভাইরাস ধ্বংস হয় কি-না তার কোনো নিশ্চিত প্রমাণ নেই। তবে অস্বস্তি যে দূর করে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতেও লবণ পানি দিয়ে গার্গল করার উপকারিতা আছে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা টেবিল-চামচ লবণ গুলে নিলেই আপনার কাজ শেষ। এখন শুধু গার্গল করতে হবে। তবে পানি গিলে ফেলা যাবে না। দিনে দুই থেকে তিনবার গার্গল করতে হবে। সুফল পেতে নুন্যতম তিন দিন করে যেতে হবে।
যষ্টিমধু
আয়ুর্বেদিক গুণসমৃদ্ধ যষ্টিমধু সরাসরি খাওয়া যায়, যোগ করা যায় চায়ের সঙ্গে। গলা ব্যথার সঙ্গে আসা চুলকানি বা অস্বস্তি দূর করতেও এটি অনন্য। মূলত এতে থাকে ভাইরাসনাশক উপাদান যা আক্রমণ করে শরীরে রোগ সৃষ্টিকারী ‘প্যাথোজেন’গুলোকে।পাশাপাশি এটি তৈরি করে উপকারী ‘মিউকাস’ যা গলার ব্যথা কমায় এবং নরম করে। এতে আরও থাকে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’, যা ‘ফ্রি র্যাডিকেল’ বা মুক্ত মৌলের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখে।
অ্যাপল সাইডার ভিনিগার
‘অ্যালকালাইন’ সমৃদ্ধ অ্যাপল সাইডার ভিনিগারের আছে প্রদাহনাশক গুণ। সর্দিকাশি সারাতে ব্যবহৃত কিছু ভেষজ ওষুধের প্রধান উপকরণ এই ভিনিগার। গলা ব্যথার জন্য অ্যাপল সাইডার ভিনিগার বিশেষ উপকারী। কারণে এতে থাকা অ্যাসিড সংক্রমণ ছড়ানোর জন্য দায়ি ব্যক্টেরিয়া ধ্বংস করে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক টেবিল-চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে পান করলেই উপকার পাওয়া যায়। স্বাদ সহ্য না হলে সঙ্গে মধু যোগ করতে পারেন।
নারিকেল তেলে অয়েল পুলিং
নারিকেল তেল মুখে নিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট কুলি করাই হল ‘অয়েল পুলিং’। নারিকেল তেল মুখের ভেতর থেকে বিষাক্ত উপাদান ও জীবাণু ধুয়ে ফেলে। সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়। এর নেই কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া এবং নারিকেল তেল গলার জন্যও অনেক মসৃণ। ‘অয়েল পুলিং’য়ের জন্য নিতে হবে দুই টেবিল-চামচ ভালোমানের নারিকেল তেল। পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে প্রতিদিন।
সতর্কতা
ঘরোয়া প্রতিকার কখনই চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প হতে পারে না। আর এই প্রচলিত পদ্ধতিগুলো শতভাগ কার্যকর হওয়ারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই একে চিকিৎসা হিসেবে গন্য না করে বরং গলা ব্যথার সমস্যায় আরাম পাওয়ার পন্থা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। আর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি নিতে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।
আগামীনিউজ/জেএস