ঢাকাঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুসরণ না করে রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় বিচারিক আদালতের ব্যাখ্যা ও নথি (কেসডকেট সিডিসহ) তলব করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) আগামী ১৫ সেপ্টম্বর সশরীরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। এছাড়া তিন দফায় রিমান্ডের আদেশ দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিচারকের কাছে ব্যাখ্যাও চেয়েছেন আদালত।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে বৃহস্পতিবার(২সেপ্টেম্বর) আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেডআই খান পান্না, মো. মুজিবুর রহমান ও সৈয়দা নাসরিন। তাদের সঙ্গে ছিলেন মো. শাহীনুজ্জামান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহহিয়া দুলাল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান।
আদেশের পরে আইনজীবীরা সাংবাদিকদের জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় নায়িকা তিন দফায় রিমান্ডের আদেশ দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা (শোকজ নোটিশ) চেয়েছেন আদালত। নথি তলব করার পাশাপাশি ঘটনায় দুই তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) তলব করেছে হাইকোর্ট।
আদেশর বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবু ইয়াহহিয়া দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আদেশের কপি পাওয়ার পরে আপিল আবেদন করার বিষয়ে নোট দেব।’
এর আগে এ বিষয়ে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে, অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন মর্মে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময় চাওয়া হয়। তাই আদালত আজ শুনানির জন্য দিন ঠিক করেন। এর আগে গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান এ আবেদন করেন।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট পরীমনির বিরুদ্ধে হওয়া মাদক মামলার জামিন আবেদনের ওপর দ্রুত শুনানি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দীর্ঘদিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির বিষয়ে দিন নির্ধারণের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, রুলে তাও জানতে চান আদালত।
পরীমনির জামিন শুনানির আবেদন শুনতে দীর্ঘ সময় দেওয়ায় বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
এছাড়া গত ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের রায় না মেনে মাদক মামলায় গ্রেফতার চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেওয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে স্বপ্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করে একটি আবেদন করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন এ আবেদন জানান।
হাইকোর্টের আদেশের পরে জামিন শুনানি করে গত ৩১ আগস্ট পরিমনির জামিন দেন আদালত। জামিনাদেশের পর বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন পরীমনি।
গত ৪ আগস্ট প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র্যাব। এ সময় পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়। পরে গত ৫ আগস্ট র্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে পরীমনি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে।