Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি পর্বে যা জানা জরুরি


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০২০, ০৫:৪৫ পিএম
ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি পর্বে যা জানা জরুরি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ ব্যাংকের চাকরিতে পদের সংখ্যা যেমন বেড়েছে সঙ্গে প্রার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে কয়েক গুণ। প্রতিযোগিতাও এখন অনেক। বিশেষত বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে চাকরি পেতে আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ভাইভা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। প্রবল প্রতিযোগিতাপূর্ণ এসব ধাপে পদার্পণ করার আগেই প্রার্থীদের মনে নানা প্রশ্ন উঁকি দেয়। ব্যাংকের চাকরির পরিপূর্ণ প্রস্তুতির জন্য এসব খুঁটিনাটি প্রয়োজনীয় প্রশ্নের আলোকে পরামর্শমূলক এ লেখাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে ব্যাংকের চাকরিতে আবেদন করা যায় কি না? এ ক্ষেত্রে স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনার বিষয় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে কতটুকু প্রভাব ফেলে?

এটি খুবই ‘কমন’ প্রশ্ন, যা কমবেশি সব শিক্ষার্থীর মাথায় আসে। এককথায় বলতে গেলে, ব্যাংকের চাকরি পেতে বা করতে ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ তেমন কোনো বিষয় নয়। আসল বিষয়টা হলো পরীক্ষায় ভালো করা। তার আগে আবেদন করার বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর চাকরির বিজ্ঞপ্তিগুলো যদি একটু খেয়াল করেন দেখবেন ‘আবেদন করার ন্যূনতম যোগ্যতা যেকোনো বিষয়ে স্নাতক’। এমনকি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও বিশেষ কিছু পদ ছাড়া অন্যগুলোতে যেকোনো বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেন।

এবার বোঝার চেষ্টা করি, ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘পড়াশোনার বিষয়’ কতটুকু প্রভাব ফেলে। নিঃসন্দেহে ব্যাংকিং, ফিন্যান্স, ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি বা ব্যবসায়সংক্রান্ত অন্য বিষয়গুলো সরাসরি ব্যাংকিং পেশাসংশ্লিষ্ট। এবং ভাইভাতে বাড়তি কিছু সুবিধা পেতেই পারেন। তবে সামগ্রিক ফলাফলের ক্ষেত্রে প্রতিফলন খুবই কম। সাম্প্রতিক কয়েকটা উদাহরণ দিলে আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। এ বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়া প্রার্থী একজন বুয়েট থেকে পাস করা গ্র্যাজুয়েট। ওই ব্যাচে তাঁর মতো অনেকেই বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে যোগ দিয়েছেন জেনারেল সাইডে। একইভাবে বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে ব্যাংকের সহকারী পরিচালক ও অফিসার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রার্থী বিজ্ঞান, কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিতে স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। রাষ্ট্রায়ত্ত শীর্ষ ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও সমীকরণটা মোটামুটি একই রকম। তা ছাড়া ব্যাংকের বিশেষায়িত বিভাগ যেমন আইটি, প্রকৌশল, পরিসংখ্যান, লাইব্রেরি, মেডিকেল—এ সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ডিগ্রিধারীরা আবেদন করতে পারেন।

একাডেমিক রেজাল্ট বা সিজিপিএ ন্যূনতম কত হলে ব্যাংকের চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন? এ ক্ষেত্রে সিজিপিএ কতটা ভূমিকা রাখে?

ব্যাংকে চাকরির সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি লক্ষ করলেই দেখবেন আবেদন করার জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ফলাফলের বিষয়ে স্পষ্ট চাহিদা থাকে। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদের জন্য আবেদনকারীকে কমপক্ষে দুটি প্রথম শ্রেণিসহ যেকোনো বিষয়ে ন্যূনতম স্নাতক হতে হয়। তবে কোনো পর্যায়েই তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। জিপিএভিত্তিক ফলাফলের ক্ষেত্রে ৫ স্কেলে ৩.৭৫ তদূর্ধ্ব হলে প্রথম শ্রেণি এবং ২.৮১ থেকে ৩.৭৫ হলে দ্বিতীয় শ্রেণি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একইভাবে সিজিপিএ ৪ স্কেলে ৩ বা বেশি হলে প্রথম শ্রেণি এবং ২.২৫ থেকে ৩.০০ পর্যন্ত দ্বিতীয় শ্রেণি ধরা হবে। এ হিসাব অনুযায়ী আবেদন করতে পারলেই যেকেউ চাকরির জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হতে পারেন।

ব্যাংকে চাকরির প্রস্তুতি পর্বে যা জানা জরুরি
মানবিকে পড়ে কি ব্যাংকে চাকরি করতে পারব? অনেকে বলে কমার্সে না পড়লে নাকি ব্যাংক জব করা যায় না। চাকরিরত অবস্থায় কি পড়ালেখা করা সম্ভব?

আগের প্রশ্নের উত্তরে বলেছি, চাকরি পাওয়ার জন্য বিজ্ঞান বা মানবিক কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। নির্ভর করে প্রস্তুতিটা কেমন তার ওপর। ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার পর পড়াশোনার বিষয় ভিন্ন হওয়ার কারণে শুরুতে কিছুটা সমস্যা হলেও কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে না। পেশাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ থাকে, যা নিজেকে এগিয়ে রাখতে বা উৎকর্ষ সাধনে সহায়ক হতে পারে। তা ছাড়া ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াটাও ব্যাংকারদের জন্য আবশ্যক। এ ক্ষেত্রেও পেশাসংশ্লিষ্ট অনেক কিছু জানার সুযোগ হয়। যেমন: বাংলাশে ব্যাংকে সহকারী পরিচালক পদে স্থায়ী হওয়ার পর ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) ফুলটাইম এমবিএম করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দেশের বাইরে বিভিন্ন সংস্থার বৃত্তির আওতায় স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেষণে মাস্টার্স ও পিএইচডি করাও সম্ভব। এতে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি, উন্নয়ন ও ব্যাংকিং খাতের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সুবিধা হয়; ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে