ঢাকাঃ হিমালয়কন্যা নেপালে আবারও ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। গত শুক্রবার রাতের বিভীষিকা কাটতে না কাটতেই রোববার (৫ নভেম্বর) ভোরে আবারও কেঁপে উঠেছে দেশটির মাটি। তবে রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল কিছুটা কম।
ভোরে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩.৬। এই ঘটনায় দেশটির অনেকের মনেই বিরাজ করছে আতঙ্ক। ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে দিয়ে রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ৩.৬ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়েছে নেপালে। ভারতের জাতীয় ভূকম্পনকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, এই কম্পনের উৎসস্থল ছিল কাঠমান্ডু থেকে ১৬৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
এদিকে প্রায় একইসময়ে ভূমিকম্প হয়েছে আফগানিস্তানেও। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, শনিবার গভীর রাতে আফগানিস্তানের ফয়জাবাদে ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৪.৫। তবে এতে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এর আগে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানে ৪.৭ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হনেছিল।
এর আগে গত শুক্রবার রাতের ভূমিকম্পে ১৫৭ জনের মৃত্যু হয় নেপালে। ৬.৪ মাত্রার শক্তিশালী সেই কম্পনে পাহাড়ের কোলে সাজানো শহর যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। উদ্ধারকাজও শেষ হয়নি এখনও। আর এর মাঝেই রোববার আবারও ভূমিকম্প হলো দেশটিতে। নেপালের বাসিন্দারাও এটি নিয়ে আতঙ্কিত।
সংবাদমাধ্যম বলছে, রাজধানী কাঠমুন্ডু থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের জারাকোত এবং পশ্চিম রুকুম ভূমিকম্পের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন সেখানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। পুরো নেপাল ছাড়াও ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মানুষও গত শুক্রবার রাতের সেই শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেন।
এছাড়া প্রথম ভূমিকম্পের এক ঘণ্টার মধ্যে আরও তিনটি ছোট ভূমিকম্প আঘাত হানে। আরও ভূমিকম্প আঘাত হানার শঙ্কা থেকে বহু মানুষ সারারাত বাড়ির বাইরেই অবস্থান করেন।
উল্লেখ্য, নেপালে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কিছু ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানী কাঠমান্ডু এবং পোখারা শহরের মধ্যবর্তী স্থানে রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে দেশটিতে অন্তত ৮ হাজার ৯৬৪ জন নিহত এবং প্রায় ২২ হাজার মানুষ আহত হন।
নেপালে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৫০ ছাড়াল
‘গোর্খা ভূমিকম্প’ নামে পরিচিত সেই ভূমিকম্পের আঘাতে উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি শহরও কেঁপে উঠেছিল। এর পাশাপাশি কম্পন অনুভূত হয়েছিল পাকিস্তানের লাহোরে, তিব্বতের লাসা এবং বাংলাদেশের ঢাকাতেও। সেই ভূমিকম্পের পর কাঠমান্ডু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এছাড়া ওই ভূমিকম্পে মাউন্ট এভারেস্টে তুষারপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ২২ জনের মৃত্যু হয়। পরে একই বছরের ১২ মে বড় ধরনের আফটারশক অনুভূত হয়। এই আফটারশকের কেন্দ্রস্থল ছিল কাঠমান্ডু এবং মাউন্ট এভারেস্টের মধ্যবর্তী চীন সীমান্তের কাছের অঞ্চল। এতে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যান এবং আহত হন ২ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি।
এমআইসি