Dr. Neem on Daraz
Victory Day

দাবালনে ছারখার যুক্তরাষ্ট্রের মাউই দ্বীপ, মৃত বেড়ে ৫৩


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৩, ১০:১৮ এএম
দাবালনে ছারখার যুক্তরাষ্ট্রের মাউই দ্বীপ, মৃত বেড়ে ৫৩

ঢাকাঃ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের মাউইয়ে ভয়াবহ দাবানলের আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত ৫৩ জন নিহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সতর্কতা দিয়েছে, এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) মৃত্যের সংখ্যা ৩৬ ছিল। যা বেড়ে এখন ৫৩ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া ভয়াবহ এই আগুনে ভষ্মীভূত হয়ে গেছে রাজ্যটির মাউই দ্বীপ।  

ধ্বংসাত্মক এই দাবানল— ঘনবসতিপূর্ণ এ অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এছাড়া পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে কয়েক হাজার অবকাঠামো। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ১৯৬১ সালের পর রাজ্যের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হতে যাচ্ছে এই দাবানল। ওই বছর সুনামিতে সেখানে ৬১ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। মাউইয়ের গভর্নর জানিয়েছেন, দাবানলে আগুনে এরচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন তারা।

সর্বনাশা এই দাবানলের সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার। ওইদনি মাউইয়ে তিনটি জায়গায় আগুন ধরে। এতে করে দ্বীপটির পুর্বাঞ্চলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই আগুন এত দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে যে জীবন বাঁচাতে অনেকে সমুদ্রের পানিতে লাফিয়ে পড়েন। তাদের কয়েকজনকে পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উদ্ধার করে। সমুদ্রে লাফিয়ে পড়াদের অনেকেই ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা এবং দ্বগ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন।

আগুনে মাউইয়ের ঐতিহাসিক শহর লাহিনা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেখানে দুই একটি অবকাঠামো ছাড়া আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মেয়র।

এক সংবাদ সম্মেলনে মাউয়ি কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বিসেন জুনিয়র বলেন, অনেক বাড়ি-ঘর এবং ব্যবসায়িক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ওই শহরে ১২ হাজার মানুষের বসবাস। স্থানীয় এক বাসিন্দা সেখানকার গণমাধ্যমকে বলেন, শহরের প্রায় সব নৌকাই পুড়ে গেছে।

হাওয়াই নিউজ নাউকে ক্রিসি লোভিট নামের ওই বাসিন্দা বলেন, মনে হচ্ছিল যেন এটা কোনো মুভির দৃশ্য। স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, মাউয়ি দ্বীপে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনই নিরূপণ করা বেশ কঠিন। মেয়র রিচার্ড বিসেন সতর্ক করেছেন যে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রায় ২ হাজার ১০০ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছেন।

লাহাইনা শহরে বসবাসকারী স্বজনদের নিয়ে অনেকেই বেশ চিন্তিত। কারণ অনেকেই এখনও নিখোঁজ। হাওয়াই নিউজ নাউকে তিয়ারা লরেন্স নামের একজন বলেন, আমি এখনো জানি না যে আমার ছোট ভাই কোথায়। আমার বাবা (সৎবাবা) কোথায় সেটাও আমি জানি না। আমি জানি লাহাইনায় থাকা প্রত্যেকের বাড়ি পুড়ে গেছে।

দ্বীপের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা বুধবার এক বিবৃতিতে জানায়, মঙ্গলবার ভোরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ দ্বীপ রাজ্যে দাবানল শরু হয়। মাউই দ্বীপের ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামো ঝুঁকির মধ্যে আছে।

হারিকেন ডোরার কারণে সৃষ্ট প্রবল বাতাসের কারণে দ্রুত দাবানল ছড়াচ্ছে। বাঁচার জন্য অনেক মানুষ পাশের সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখানো হয়েছে যে প্রায় ১২ হাজার বাসিন্দার শহর লাহাইনার কেন্দ্রে আগুন জ্বলছে। এ শহরটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার মাউইয়ের দাবানলকে ‘বড় বিপর্যয়’ হিসেবে ঘোষণা দেন। তার এ ঘোষণার কারণে এখন সেখানকার মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা পাবে।

হাওয়াইয়ের মাউইয়ে দাবানলের সূত্রপাত কীভাবে হলো সেই কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বীপটি অস্বাভাবিক খরার মধ্যে ছিল। আর এই খরার কারণে সেখানে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এছাড়া সেখানে যেসব ঘাস ছিল সেগুলো বেশ দাহ্য ছিল। আর দাবানল দ্রুত ছড়ানোর কারণ হলো প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট একটি হ্যারিকেন। এই হ্যারিকেনের বাতাসের ঝাপটায় কোনো কিছু বোঝার আগেই দ্রুত গতিতে পুরো দ্বীপে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে