Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লাখো হাজির লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৩, ১১:০৪ এএম
লাখো হাজির লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর আরাফাতের ময়দান

ঢাকাঃ লাখো হাজির ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে আরাফাতের ময়দান। আজ মঙ্গলবার (২৭ জুন) পবিত্র হজ। মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ মিলনমেলা। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, সাদা-কালো কোনো ভেদাভেদ নেই আজ। সব ভেদাভেদ ভুলে শুধু দুই খণ্ড সাদা কাপড় শরীরে জড়িয়ে সবাই একত্রিত হয়েছে আরাফার ময়দানে। সবার মুখেই একই ধ্বনি লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ, আমি হাজির।’ লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক ‘হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই।’ ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারিকা লাক ‘সব প্রশংসা ও নেয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার, তোমার কোনো শরিক নেই’।

সারাবিশ্ব থেকে আজ ২৫ লাখেরও বেশি মুসলমান আরাফার ময়দানে হাজির হয়েছেন। সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, চলতি বছর আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হজ করতে যাচ্ছি। করোনার বিধিনিষেধ পুরোপুরি উঠে যাওয়ায় এবার আগের বছরের তুলনায় বহু পরিমাণে বেড়েছে হজযাত্রীর সংখ্যা। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে হজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার মানুষ। আর ২০২১ সালে ৫৯ হাজার। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১০ লাখ।

আজ ৯ জিলহজ (সৌদিতে চাঁদ দেখা অনুযায়ী) মূল হজের দিন হাজীরা আরাফার ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন। চার বর্গমাইল আয়তনের এই বিশাল সমতল ভূমিতে যার যার মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে তারা ইবাদত করবেন; হজের খুতবা শুনবেন এবং জোহর ও আসরের নামাজ পড়বেন। আরাফার ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শায়খ ড. ইউসুফ বিন মুহাম্মদ বিন সায়িদ। বিশ্বের ৩০ কোটির বেশি মানুষের কাছে ইসলামের শান্তিপূর্ণ বাণী পৌঁছে দিতে ২০টির বেশি ভাষায় খুতবা সম্প্রচার করা হবে।


সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফার ময়দানে অবস্থান করে হাজীরা আল্লাহর জিকির-আসকার ইবাদতে দোয়ায় মশগুল থাকবেন। অতঃপর মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সারারাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য পাথর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন।
 
মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে মিনার দিকে রওনা হবেন। ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। এরই মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মেতে উঠবেন ঈদের আনন্দে।
 
জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাতযাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। আর এ কাজটি করা সুন্নত। পরদিন ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। আর মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে, কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ী তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাতবার চক্কর দেয়ার মাধ্যমে হাজিরা পবিত্র হজব্রত পালন সম্পন্ন করবেন। 
 
এদিকে গতকাল সারা দিন এবং গতরাতে হজযাত্রীরা মিনায় অবস্থান করেন। সেখানেই শুরু হয় পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। পবিত্র হজ উপলক্ষে মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফার ময়দান, মুজদালিফা ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। 

মসজিদ হারামাইন শরীফাইন (Haramain Sharifain) ফেসবুক পেজে ও সৌদির টিভি চ্যানেলগুলোতে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে হজের যাবতীয় কার্যক্রম। এছাড়া ইউটিউব চ্যানেলও দেখা যাচ্ছে পবিত্র হজ। 

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে