ঢাকাঃ তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার ছুঁয়েছে। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সর্বশেষ খবরে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এর মধ্যে তুরস্কে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫ হাজার ৮৯৪ জন মারা যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সিরিয়ায় ১ হাজার ৯৩২ জন মারা গেছেন বলে জানানো হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনোমিস্টকে ওভগান আহমেত এরকান নামে একজন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তিনি ধারণা করছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষ এখনো জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় আটকে আছেন। তবে তার এ দাবির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদিও বলা হয়েছে, তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রায় ১৩ লাখ মানুষ।
তবে এখনো যে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন সেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তুরস্কের হাতেই নামের একটি অঞ্চল। সেই অঞ্চলের অনেক জায়গায় এখনো উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারেননি।
বলা হচ্ছে, হাতেইয়ের বেশিরভাগ ভবন ধসে গেছে। ধ্বংসযজ্ঞের পরিমাণ এতই বেশি যে, উদ্ধারকারীরাও আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না।
সোমবার ভোরের দিকে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তর সিরিয়ার বেশ কয়েকটি শহর তছনছ হয়ে যায়। ২ হাজারের বেশি ভবন ধসে চাপা পড়ে বহু মানুষ।
ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে মঙ্গলবার রাতভর উদ্ধার অভিযান চলতে থাকে। উদ্ধারকারীরা বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধানে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কেননা সময় যত গড়াচ্ছে, তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও ফুরিয়ে যাচ্ছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার ভোরের দিকে যখন মানুষজন ঘুমিয়ে ছিলেন ঠিক তখনই আঘাত হানে এই ভূমিকম্প। ইউএসজিএস জানায়, সোমবার স্থানীয় সময় ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। কম্পনের উৎসস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের পূর্ব দিকে নুরদাগি শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূগর্ভের প্রায় ২৪ দশমিক ১ কিলোমিটার গভীরে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। ৯ হাজার সেনাসহ অন্তত ১২ হাজার উদ্ধারকারী কাজ করছেন তুরস্কে। ৭০টির বেশি দেশ উদ্ধারকারী দল ও অন্যান্য সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, ত্রাণ সহায়তা পাঠানো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে সিরিয়ায়।
বুইউ