ঢাকাঃ স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলা করছে পাকিস্তান। বিধ্বংসী এই বন্যায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার তিনশ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশজুড়ে ত্রাণ কার্যক্রম এখনও চালু রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আরও ‘বেশি পরিমাণে মানবিক সহায়তা’ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান।
গত জুন থেকে বন্যায় দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) নিশ্চিত করেছে।
পাকিস্তানের সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো ত্রাণ সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে। এই বন্যা পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল বলেন, ‘বিধ্বংসী এই বন্যায় ধ্বংসের মাত্রা অনেক বেশি এবং ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষের জন্য বিশাল মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এর জন্য আমি পাকিস্তানি নাগরিক, প্রবাসী পাকিস্তানি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই প্রয়োজনের সময়ে পাকিস্তানকে সাহায্য করার জন্য আবেদন করছি।’
জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলই এখন পানির নিচে। বিশেষ করে বেলুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখোয়া এবং সিন্ধু প্রদেশের বিভিন্ন অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
সিন্ধু প্রদেশে কমপক্ষে ১৮০ জন, খাইবার পাখতুনখোয়ায় ১৩৮ জন এবং বেলুচিস্তানে ১২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ১৯টি বাড়ি-ঘর সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বন্যায় ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৫৯ গবাদি পশু প্রাণ হারিয়েছে।
বিভিন্ন দেশ থেকে এরই মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। শনিবার সকালে ফ্রান্স থেকে মানবিক সহায়তা নিয়ে একটি ফ্লাইট ইসলামাবাদে অবতরণ করেছে।
বন্যায় দেশটিতে ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী শাজিয়া মেরি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ২৩ হাজার ৯১৯টি পরিবারকে ২৫ হাজার রুপি করে নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বের একাধিক কর্মকর্তা এবং বিশেষজ্ঞরা অস্বাভাবিক মৌসুমী বৃষ্টিপাত ও বন্যার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও একই ইঙ্গিত দিয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে মারাত্মক সংকটের সময় বিশ্বকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তান যাবেন গুতেরেস।
এমবুইউ