ঢাকাঃ স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান। ইতোমধ্যে দেশটির এক তৃতীয়াংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির জলবায়ু বিষয়কমন্ত্রী শেরি রেহমান। তিনি বলেছেন, আকস্মিক বন্যায় রাস্তা, বাড়িঘর এবং জমির ফসল ভেসে গেছে। বন্যায় পুরো পাকিস্তানজুড়ে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
শেরি রেহমান আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা এই মুহূর্তে পানির নিচে। এটি একটি বিশাল সমুদ্র। পানি সেচে ফেরার জন্য কোনো শুকনো জমি নেই। যা অকল্পনীয় সংকট।
গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টি এক দশকের মধ্যে রেকর্ড করা সবচেয়ে ভারী বৃষ্টি বলে জানান মন্ত্রী রেহমান। বার্তা সংস্থা এএফপিকে পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বলেন, ‘আক্ষরিক অর্থে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ এই মুহূর্তে পানির নিচে। অতীতের প্রতিটি সীমা, প্রতিটি রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। আমরা এর আগে কখনো এ পরিস্থিতি দেখিনি।’
কর্মকর্তাদের মতে, জুনে বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ১১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করছে দেশটির সরকার।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি বলেছেন, ‘নিহতদের এক-তৃতীয়াংশ শিশু বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে চেষ্টা করছি।’
বন্যা শুরুর পর ইতোমধ্যে ৩৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাকিস্তানের জনসংখ্যার তুলনায় প্রতি সাতজনের একজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় এক মিলিয়ন বাড়ি ধ্বংস বা খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এনডিএমএ বলেছে যে, দুই মিলিয়ন একরের বেশি চাষের ফসল নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ৩,৪৫১ কিলোমিটার (২,১৫০ মাইল) রাস্তা ধ্বংস হয়েছে এবং ১৪৯টি সেতু ভেসে গেছে।
নদীর বিশাল ঢেউয়ের কারণে একটি বড় সেতু ধ্বংস হওয়ার পর উত্তর পাকিস্তানে কয়েক হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। মারাত্মক বন্যা সারা দেশে ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশে শক্তিশালী আকস্মিক বন্যার কারণে কাবুল নদীর পানি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, রাতারাতি একটি বড় সেতু ভেসে গেছে। এর ফলে কয়েকটি জেলা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। দুর্যোগ কর্মকর্তারা বলছেন, কেউ কেউ তাদের গবাদি পশু নিয়ে মহাসড়কে রাত কাটাচ্ছেন।
এমবুইউ