ঢাকাঃ ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি বারবার দিয়ে আসছে ইসরায়েল। এবার সামরিক অভিযানের হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি সরকার। দেশটিকে চাপে ফেলতে সব ধরনের চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ বেড়েই চলেছে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে। গত মাসে ওমান উপসাগরে তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার পর তা আরও বেড়ে যায়। ইসরায়েলি তেল ট্যাংকারে হামলার জন্য ইরানকেই দায়ী করেছে ইসরায়েল। এবার ইরানকে চাপে ফেলতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে আলোচনা করবেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট।
এদিকে, ওমান উপসাগরে তেলবাহী ট্যাংকারে হামলায় ইরানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। বুধবার তেল আবিবে একটি অনুষ্ঠানে আবারও ইরানকে দায়ী করে দেশটিকে প্রতিহত করার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে ইরানকে প্রতিরোধ করতে এরই মধ্যে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু করেছে নাফতালি বেনেট সরকার। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে নাফতালি বেনেট। এরই মধ্যে অ্যামেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটি এআইপিএসির প্রধানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। বৈঠকে বসবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও। এতে ইরান ইস্যুতে আলোচনার কথা রয়েছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও সাম্প্রতিক সময়ে তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার বিষয়টিও বেনেট আলোচনায় উত্থাপন করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, সম্প্রতি ইসরায়েলের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল আমোস ইয়াদলিন বলেছেন, সামরিক হামলা চালিয়ে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। তিনি মার্কিন নিউজ চ্যানেল সিএনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, ইসরায়েল যেমন ১৯৮১ সালে ইরাকের এবং ২০০৭ সালে সিরিয়ার পরমাণু স্থাপনা মাত্র একবার হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিল ইরানের পরমাণু স্থাপনা সেভাবে ধ্বংস করা সম্ভব নয়।
ইসরায়েলের এই সাবেক জেনারেল ও তেল আবিব ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে ইরাক ও সিরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি অনেক বেশি সমৃদ্ধ ও বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো ছিটানো। অথচ ইরাক ও সিরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি ছিল একটি স্থানে সীমাবদ্ধ। ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো বহু স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এগুলোর বেশিরভাগ পাহাড়ের নীচে ভূগর্ভে স্থাপন করা হয়েছে।