Dr. Neem on Daraz
Victory Day
পাকিস্তানে

নারী সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা


আগামী নিউজ | আর্ন্তজাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২০, ১২:৪৬ পিএম
নারী সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা

ফাইল ছবি

শাহীনা শাহীন নামের এক নারী সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করেছে তার স্বামী, অভিযোগ করেছে তার পরিবার। তিনি দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভির বেলুচিস্থানে কর্মরত ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসিন। এছাড়া, টকশোর সঞ্চালকের পাশাপাশি স্থানীয় একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনাও করতেন তিনি। শনিবার বেলুচিস্তান প্রদেশের তুরবাত শহরে হত্যার ঘটনাটি ঘটে৷

মোহাম্মদ মহসিন এর ভাষ্য অনুযায়ী, শাহীনকে গুরুতর অবস্থায় দুজন ব্যক্তি হাসপাতালে রেখে যান৷ তাদের একজন শাহীনের স্বামী নওয়াবজাদা মাহরাব বলে পরবর্তীতে জানতে পেরেছে পুলিশ৷

মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজ আহমেদ বলেন, শাহীনের পরিবার এই ঘটনায় তার স্বামী জড়িত থাকার কথা জানিয়েছে৷ একে ‘অনার কিলিং’ হিসেবে সন্দেহ করছেন তারা৷  ছয়মাস আগেই এই দম্পতি ‘কোর্ট ম্যারেজের' মাধ্যমে বিয়ে করেছিলেন৷

এর আগে গত নভেম্বরে লাহোরে আরুজ ইকবাল নামের আরেক সাংবাদিককে খুন করার দায়ে তার স্বামী অভিযুক্ত হয়েছেন৷

অনার কিলিং বা পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে হত্যা পাকিস্তানে প্রায় নিয়মিত ঘটনা৷ দেশটির মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি অনুযায়ী প্রতি বছর  প্রায় এক হাজার নারী এমন হত্যার শিকার হন৷ সাংবাদিকদের জন্য বিপজ্জনক দেশ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তান। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের ২০২০ সালের বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ১৪৫। ১৯৯২ সাল থেকে পাকিস্তানে অন্তত ৬১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। 

প্রতিবছর কতজন অনার কিলিংয়ের শিকার?

২০০০ সাল থেকে বিক্ষিপ্তভাবে সংগৃহীত ও প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে বছরে প্রায় ৫,০০০ অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে থাকে৷ এই সংখ্যা জাতিসংঘের বিবৃতির সঙ্গেও মেলে৷ যেহেতু বহু অনার কিলিংয়ের ঘটনাকে দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়, সেহেতু বাস্তব পরিসংখ্যান এর চারগুণ হলেও আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷ পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে যাদের হত্যা করা হয়, তাদের গড় বয়স ২৩ ও তাদের ৯৩ শতাংশই মেয়ে৷ দুই-তৃতীয়াংশ প্রাণ হারায় পরিবারের সদস্যদের হাতে৷ নিহতদের অর্ধেক হত্যাকারীর মেয়ে, নয়তো বোন; নিহতদের এক চতুর্থাংশ হত্যাকারীর স্ত্রী কিংবা বান্ধবী৷ হত্যার কারণ ষাট ভাগ ক্ষেত্রে ‘বড় বেশি পশ্চিমি’ হয়ে পড়া; বাকিদের ক্ষেত্রে পুরুষ বা পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ৷সে দেশের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৫ সালে পাকিস্তানে প্রায় ১,১০০ অনার কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে৷ পাকিস্তানের গ্রামীণ সমাজে অনার কিলিংয়ের প্রতি জনসাধারণেরও সমর্থন থাকার ফলে, এই কুপ্রথা দূর করার যাবতীয় প্রচেষ্টা ব্যহত হয়েছে ও হচ্ছে৷ ইতিপূর্বে নিহতের পরিবার হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিলে সে ছাড় পেতো; এ’বছর আইনের সে ফাঁকটি বন্ধ করা হয়েছে৷

‘বাংলাদেশে অনার কিলিং মানসিকতায়’

বাংলাদেশে অনার কিলিংয়ের খবর এখনো পাওয়া যায়নি৷ তবে পরিবারের পছন্দে বিয়ে না করার কারণে হত্যার ঘটনা বেশ কিছু ঘটেছে৷ তাই জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম বলছেন, ‘‘অনার কিলিংয়ের মানসিক অবস্থা এখানে (বাংলাদেশে) বিদ্যমান৷ পাকিস্তানের মতো এখানে এটা প্রকট নয়৷ তবে যা হচ্ছে তা ব্যক্তি ও পরিবারের অহংবোধ থেকে৷ এখানে সমস্যাটি হলো ধনী-গরীবের ব্যবধান নিয়ে৷''

সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে

আগামীনিউজ/মিথুন

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে