ঢাকা : লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে দেড় শতাধিক মানুষ নিহতের ঘটনার পর রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ক্ষুব্ধ দেশটির কয়েক হাজার মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
শনিবার বিক্ষোভকারীরা দেশটির একাধিক মন্ত্রণালয় ও ব্যাংক সমিতি ভবনে ভাঙচুরও চালিয়েছে। লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউনের ছবি পুড়িয়ে প্রথমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢুকে পড়ে বিক্ষুব্ধ জনগণ। তারা সেখান থেকে সব মন্ত্রণালয় দখলে নেয়ার ঘোষণা দেয়।
বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে সর্বকালের সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ আর এর জন্য দায়ী রাজনীতিবিদদের অবহেলা। তাদের শাস্তি দেয়া উচিত কারণ বিস্ফোরণে ১৫৮ জন মারা গেছেন এবং ৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, প্রতিবাদকারীদের ধাওয়া করার পরে পাশের একটি বিল্ডিংয়ের লিফটে খাদে পড়লে ওই কর্মকর্তা মারা যান।
রেড ক্রস জানিয়েছে যে তারা বিক্ষোভস্থল থেকে আহত ১১৭ জনের চিকিৎসা করেছে এবং আরও ৫৫ জনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের লক্ষ্য কওে ইট ও পাথর ছোড়ে এবং কেন্দ্রীয় শহীদ স্কয়ারে আগুন লাগায়।
এদিকে জনগণের ক্ষোভের মুখে লেবাননের চারজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছেন। কাতায়েব পার্টির তিনজন সংসদ সদস্য এবং একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, তারা ১২৮ সদস্যের পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করছেন।
পদত্যাগের পর সংসদ সদস্য নাদিম গেমায়েল বলেন, ‘আমরা এবং আরো কয়েকজন সম্মানিত সংসদ সদস্য রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মুখোশ খুলে দেব।’
এদিকে নারী সংসদ সদস্য পলা ইয়াকুবিয়ানও তার পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি লেবাননের অন্যান্য আইন প্রণেতাদের প্রতিও একই আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি টুইটারে বলেন, ভেতর থেকে বিরোধিতা আর কাজে লাগবে না।
গত মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় একটি রাসায়নিক পদার্থের গুদামে বিস্ফোরণের ঘটনায় বৈরুতের বেশ কয়েকটি এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লেবাননের কর্মকর্তারা বলছেন, ছয় বছর ধরে বন্দরে অনিরাপদভাবে মজুদ করা দুই হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বিস্ফোরণের ফলে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে।
এদিকে এ ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স
আগামীনিউজ/এসপি