ঢাকাঃ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করেন বিশ্বের অনেক দেশের নাগরিক। তাদের অনেকেই অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে প্রবেশ করেছেন। আর এবার এমনই অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করার পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্য।
মূলত ফেডারেল সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে আইন প্রণয়ন করেছে মার্কিন এই অঙ্গরাজ্যটি। মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেক্সাস এমন একটি আইন প্রণয়ন করেছে যা সীমান্ত পার হয়ে দেশে প্রবেশকে বেআইনি করে দেবে এবং এই ধরনের কাজ কারাদণ্ডের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। এটি আধুনিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও অঙ্গরাজ্যের পাস করা কঠিনতম অভিবাসন আইনগুলোর মধ্যে একটি।
টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বলেছেন, এই আইন ‘টেক্সাসে অবৈধভাবে প্রবেশের উত্তাল ঢেউ বন্ধ করবে’। অবশ্য অভিবাসনের সমর্থকরা বলেছেন, এই আইনটি জাতিগত বিদ্বেষের সৃষ্টি করবে।
ক্রমবর্ধমান অবৈধ অভিবাসন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সীমান্ত নীতির বিষয়ে জনসাধারণের উদ্বেগের মধ্যেই টেক্সাসের এই পদক্ষেপ সামনে এলো।
বিবিসি বলছে, টেক্সাসের প্রণয়ন করা নতুন এই আইন কিছুটা বিতর্কিত, কারণ মার্কিন আদালত আগেই রায় দিয়েছে যে, শুধুমাত্র ফেডারেল সরকার অভিবাসন আইন প্রয়োগ করতে পারে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা যুক্তরাষ্ট্রে ইতোমধ্যেই ফেডারেল অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হয়। তবে এই ধরনের অপরাধ বর্তমানে ইমিগ্রেশন আদালতে দেওয়ানী মামলা হিসাবে পরিচালিত হয়ে থাকে।
এসবি৪ (SB4) নামের এই আইনটি আগামী বছরের মার্চে কার্যকর হতে চলেছে। গত নভেম্বরে টেক্সাসের রিপাবলিকান-নেতৃত্বাধীন আইনসভার উভয় হাউসে এটি পাস হয়। বাস্তবে এই আইনটি স্কুল এবং হাসপাতাল ছাড়া অন্য সকল স্থানে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছে বলে সন্দেহভাজন যে কাউকে থামাতে এবং গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেবে পুলিশকে।
এই অপরাধে সম্ভাব্য শাস্তির মধ্যে কারাদণ্ড বা ২ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের সীমান্ত পেরিয়ে মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানোর আদেশও দিতে পারেন বিচারক।
যদিও টেক্সাস কর্তৃপক্ষ কীভাবে সেই বিধানটি কার্যকর করার পরিকল্পনা করছে তা স্পষ্ট নয়। এছাড়া অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃপ্রবেশের শাস্তি হিসেবে ২০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে ওই অভিবাসীর অভিবাসন এবং অপরাধমূলক অতীত ইতিহাস বিবেচনায় নেওয়া হবে।
গত নভেম্বরে টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক বলেছিলেন, এই আইনটি ‘টেক্সাসকে সুরক্ষিত রাখবে’ এবং এটি ‘টেক্সাসে পাস করা সবচেয়ে শক্তিশালী সীমান্ত সুরক্ষা বিল’।
তবে এই আইনটিকে আইনি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হতে পারে। বিলটি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা এবং মেক্সিকো সরকারের কাছ থেকেও সমালোচনার মুখে পড়েছে।
এমআইসি/