ঢাকাঃ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তবে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি।
এমনকি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিও হয়ে উঠেছে বেশ জোরালো। তবে ইসরায়েল বলছে, গাজায় তাদের যুদ্ধ চলতে পারে আরও কয়েক মাস। যদিও গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে এই সপ্তাহেই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে ‘কয়েক মাসেরও বেশি সময়’ লাগতে পারে বলে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানকে বলেছেন।
সুলিভান বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করতে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন।
অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের সমালোচনা করে বলেছেন, গাজায় নির্বিচারে বোমাবর্ষণের কারণে ইসরায়েল বিশ্বব্যাপী সমর্থন হারাচ্ছে। আর এই সপ্তাহেই গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
বিবিসি বলছে, বৃহস্পতিবার জ্যাক সুলিভানের সাথে সাক্ষাতের সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, ‘হামাস একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং তারা ইসরায়েলের সাথে লড়াই করার জন্য এক দশক ধরে নিজেদের তৈরি করেছে’।
গ্যালান্টের দাবি, ‘তারা মাটির নিচে ও মাটির ওপরে নানা অবকাঠামো তৈরি করেছে এবং তাদের ধ্বংস করা সহজ নয়। এর জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন হবে - এটি (যুদ্ধ) কয়েক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলবে, কিন্তু আমরা জিতব এবং আমরা তাদের ধ্বংস করব।’
যদিও যুক্তরাষ্ট্র বারবার ইসরায়েলকে তার সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে, কিন্তু চলমান যুদ্ধে নারী ও শিশুসহ বেসামরিক মানুষের ক্রমবর্ধমান মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
এমনকি গাজার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজেও ক্রমবর্ধমান আহ্বানের সম্মুখীন হচ্ছেন। যার মধ্যে তার নিজের দলের মধ্যে থেকেও কিছু দাবি সামনে আসছে। তারা মূলত গাজায় অভিযানের সময় ইসরায়েলকে আরও সংযত হওয়ার বিষয়ে চাপ দেওয়ার জন্য বাইডেনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় ডেমোক্র্যাটিক কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসযোগ্যতা ‘গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে’। গাজায় চলমান সংঘাতের কারণে এবং ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার ‘শর্তাধীন’ এমন উপলব্ধির কারণে ‘মানবাধিকারের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতাও’ গুরুতর ঝুঁকিতে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেই নজির স্থাপন করার সুযোগ দিতে পারি না। গাজায় বহু মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আমরা সংখ্যার দিক থেকে অনেক ওপরে পৌঁছে গেছি। সেজন্য আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং এখনই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে হবে।’
এমআইসি/