ঢাকাঃ ফিলিস্তিনিদের হামলায় আরও আট ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, নিহত ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে একজন ৩৫ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট কর্নেল, দু’জন ২৩ বছর বয়সী মেজর, একজন ১৯ বছর বয়সী সার্জেন্ট এবং একজন ২২ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন রয়েছেন। তারা সবাই ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনীর গোলানি ব্রিগেডের সদস্য। নিহত ইসরায়েলি সেনাদের সবাই উত্তর গাজার যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার উত্তরের লড়াইয়ে ৬৯৯ স্পেশাল রেসকিউ ট্যাকটিকাল ইউনিটের সঙ্গে দু’জন মেজর নিহত হয়েছেন। তাদের বয়স যথাক্রমে ২৬ ও ২০ বছর।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক ‘যুদ্ধ প্রকৌশলী’ মারা গেছেন। সার্জেন্ট পদবীর ওই সেনার বয়স ১৯ বছর।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ জানিয়েছে যে ইসরায়েল গাজা আক্রমণ করার পর থেকে মোট ১০৫ ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন ৬০০ জন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তবে এ মোট নিহতের সংখ্যায় সর্বশেষ আটটি মৃত্যুর খবর অন্তর্ভুক্ত কিনা তা জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি।
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৪১২ জন।
গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ হাজার ১০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৪৫০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং সড়কে এখনও অনেক হতাহত মানুষ রয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’
সূত্র : আল-জাজিরা, মিডল ইস্ট আই, আনাদোলু এজেন্সি
এমআইসি/