ঢাকাঃ ইসরায়েলের সাথে লেবাননের সীমান্তজুড়ে গোলাবর্ষণ তীব্র আকার ধারণ করেছে। বৃহস্পতিবার লেবাননের সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে, সীমান্তে ইসরায়েলের ৮টি অবস্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা। আর ইসরায়েল বলেছে, হিজবুল্লাহর হামলার জবাবে লেবাননে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ইসরায়েলের ভেতরে আটটি এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। এই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী, তাদের ব্যারাক ও অন্যান্য সামরিক চৌকি।
লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্তজুড়ে কমপক্ষে এক ডজন গ্রামে ড্রোন হামলাসহ যুদ্ধবিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
অপর দিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, লেবাননে হিজবুল্লাহর একটি ঘাঁটিতে যুদ্ধবিমান থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। এই ঘাঁটি থেকে হিজবুল্লাহর সদস্যরা ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করেছে। এছাড়াও হিজবুল্লাহর আরও কিছু স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে সৈন্যরা।
তবে হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলে কোনও ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহত হয়নি বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। লেবাননের নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে গোলা বিনিময় করে আসছে হিজবুল্লাহ। তবে যুদ্ধ শুরুর পর সবচেয়ে সহিংস দিন ছিল বৃহস্পতিবার।
বিবৃতিতে গাজা উপত্যকায় ‘‘আমাদের দৃঢ়চিত্তের ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে’’ ইসরায়েলে হামলা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েল-লেবানন সীমান্ত এলাকায় এবারের এই সংঘাত ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই প্রত্যেক দিন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সাথে হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের প্রাণঘাতী সংঘর্ষ চলছে। গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
লেবাননের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, লেবানন সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর সাথে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা এবং ১০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আর হিজবুল্লাহর সাথে সংঘর্ষে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্তত সাত সদস্যসহ ১০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন। উভয় সীমান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স।
এমআইসি