ঢাকাঃ আবাসিক ভবনগুলোসহ নতুন করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নতুন করে এসব হামলায় আরও ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৯ হাজার ২০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স বহরে হামলার কথা স্বীকার করেছে ইসরায়েল।
শুক্রবার গুরুতর আহত রোগী বোঝাই অ্যাম্বুলেন্স বহরে ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়া একটি বেসামরিক পরিবহন বাসে হামলার ঘটনাতেও হতাহতের তথ্য মিলেছে। খবর আল জাজিরার
শুক্রবার গাজার আল শিফা হাসপাতালের সামনে বিমান হামলা চালানো হয়। এ সময় গুরুতর আহতদের অন্যত্র নেয়ার সময় হামলায় অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা কর্তৃপক্ষ। আল শিফা হাসপাতালের গেটে ইসরাইলের বোমা হামলায় বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেন, প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন গুরুতর আহত রোগীকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা চলছিল। তবে অ্যাম্বুলেন্স বহরে হামলায় প্রাথমিক তথ্যমতে ১৩ জন নিহতের খবর পাওয়া যায়। এরপর নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জন হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, গাজার আল-রশিদ রোড দিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে বেসামরিক একটি বাসে হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছে।
প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) মুখপাত্র মোহাম্মদ আবু মুসবাহ বলেছেন, হামলার সময় হাসপাতালের প্রবেশপথ ‘বেসামরিক লোকে পূর্ণ’ ছিল।
অ্যাম্বুলেন্সে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। তবে তাদের দাবি হামলার শিকার অ্যাম্বুলেন্স হামাস যোদ্ধারা ব্যবহার করছিল।
তবে হামাস গাড়িটি ব্যবহার করছে- ইসরায়েলের এমন অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে ফিলিস্তিনের বৃহত্তম এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শিগগিরই বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলে এই হাসপাতাল মৃত্যুপুরীতে রূপ নেবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চিকিৎসকরা।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের দখলদারিত্বের বিপরীতে হামাসের রুখে দাঁড়ানোর মধ্যে ইসরায়েল বোমাবর্ষণ শুরু করে। এতে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৯ হাজার ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পর্যন্ত হামলায় সাড়ে ২৩ হাজার ফিলিস্তিনি আহতের তথ্য মিলেছে।
গাজায় ১১,০০ শিশুসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এসব মানুষের অধিকাংশই মৃত এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপরন্তু, ইসরায়েলি বাহিনী এবং বসতি স্থাপনকারীরা একই সময়ে পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ১৩১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অধিকৃত অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের মাসিক মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এ বছর পশ্চিম তীরে নিহত হওয়া ফিলিস্তিনিদের মোট সংখ্যা ৩৪৩ জনের ওপরে।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ১৩০ প্যারামেডিক এবং মেডিকেল ক্রু নিহত হয়েছেন। সেখানে ২৮টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে এবং ২৭০টিরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় বিমান হামলা হয়।
এদিকে নিরাপত্তা কাউন্সিলে জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থাগুলো আবারও মানবিক অস্ত্র বিরতির জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
এমআইসি