ঢাকাঃ ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধরত ইসরায়েল সেখানকার অপর ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। রোববারের রাতব্যাপী এই অভিযানে অন্তত ৬০০ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
গ্রেপ্তার এই ফিলিস্তিনিদের কোনো অতীত অপরাধের রেকর্ড নেই বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজন ও আইনজীবীরা। ইসরায়েলি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীও এ ব্যাপারে কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘প্রশাসনিক’ কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই ফিলিস্তিনিদের।
গত ৭ অক্টোবর হামাস অতর্কিতে হামলা চালানোর পর থেকে যুদ্ধ শুরু হয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে। যুদ্ধে উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪ হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি নাগরিক।
যুদ্ধের মূল আঘাত গাজা উপত্যকার ওপর দিয়ে গেলেও পশ্চিম তীরেও তার রেশ পৌঁছেছে। গত আট দিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৪ জন।
প্রসঙ্গত, প্রায় দুই বছর ধরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার পর গত ৭ অক্টোবর ভোররাতে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক রকেট ছোড়া শুরু করে হামাস এবং সূর্যের আলো ফোটার আগেই ইসরায়েলের দক্ষিণাংশের সীমান্ত বেড়া বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ওই ভূখণ্ডে প্রবেশ করে শত শত সশস্ত্র হামাস যোদ্ধা।
হামাসের হামলায় প্রথম দিনই ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন কয়েকশ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। এছাড়াও দেড় শতাধিক মানুষকে এদিন জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গেছে হামাস। এই জিম্মিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে— তা এখনও অজানা।
প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য ও প্রস্তুতির অভাবে হামলার শুরুর দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা কাটিয়ে পূর্ণ শক্তিতে যুদ্ধের ময়দানে নামে ইসরায়েল এবং প্রথম দিন থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করেছিল আইডিএফের বিমান বাহিনী।
দুই পক্ষের যুদ্ধে গাজায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৬৭০ জন নিহত এবং ৯ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
আর আইডিএফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত হামাসের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ও অন্যান্য দেশের নাগরি।
১৯৫৩ সালের পর এই প্রথম এত বড় মাত্রার যুদ্ধ চলছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে।
সূত্র : আলজাজিরা
এমআইসি