ঢাকাঃ ইরাকের নিনেভেহ প্রদেশে গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়। যেখানে দিনটি হওয়ার কথা ছিল একটি ‘আনন্দময় দিন’— সেখানে সেদিন মানুষের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছিল আকাশ-বাতাস।
ভয়াবহ সেই আগুন লাগার একটি ছবি এখন ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, বর-কনের ‘স্লো ডান্স’ উপভোগ করছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। কেউ যেন একটুও বুঝতে পারেননি একটু পরই কি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে যাচ্ছেন তারা।
সেদিনের সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১৩ জন নিহত হলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান বর-কনে দুজনই।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সেদিনের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বর রিভান এবং কনে হানিন। রিভান কথা বললেও হানিন যেন একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।
রিভান স্কাই নিউজকে বলেছেন, ‘এটি সত্যি যে আমরা এখানে আপনার সামনে জীবিত অবস্থায় বসে আছি। কিন্তু ভেতরে আমরা মরে গেছি। আমরা রুদ্ধ। আমরা ভেতরে মৃত।’
রিভান এই অগ্নিকাণ্ডে হারিয়েছেন পরিবারের ১৫ সদস্যকে। অপরদিকে কনে হানিন হারিয়েছেন ১০ সদস্যকে। যার মধ্যে তার মা ও ভাই রয়েছেন। অপরদিকে তার বাবা গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রাথমিক অবস্থায় ধারণা করা হয়েছিল, আতশবাজি বা এ ধরনের কোনো বস্তু থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে বর রিভান বলেছেন, তিনি ধারণা করছেন বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেছে।
তিনি বলেছেন, ‘এটি একটি শটসার্কিট হতে পারে। আমি জানি না। কিন্তু আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল ছাদে (সিলিং)। আমরা সেটির তাপ অনুভব করতে পেরেছিলাম। যখন খটখট শব্দ শুনতে পাই আমি উপরে তাকাই। এরপর ছাদটি গলে পড়া শুরু করে। এটি পুরোপুরি নাইলন দিয়ে বানানো ছিল। কয়েক সেকেন্ড সময় লাগল মাত্র।’
রিভান জানিয়েছেন, পুরো হলরুমে মাত্র একটি অগ্নিনির্বাপক ছিল। কিন্তু সেটিও কাজ করেনি।
তিনি আরও জানিয়েছেন, আগুন যখন দ্রুত ছড়ানো শুরু করল তখন সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর হাত ধরে কোনোমতে সেখান থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। কিন্তু হুড়োহুড়ির মধ্যে তার স্ত্রী পায়ে আঘাত পান।
সূত্র: স্কাই নিউজ
এমআইসি