ঢাকাঃ ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গণে চলমান ‘ইন্ডিয়া বনাম ভারত’ বিতর্ক নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্কতা বজায় রাখার জন্য দলের মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমনকি এ বিষয়ে মন্তব্য করা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিরত থাকারও আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একাধিক সূত্র ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। বৈঠকে আগতদের উদ্দেশে মোদি বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া বনাম ভারত’ ইস্যুতে বিজেপির সব নেতার কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। এমনকি এ বিষয়ে কথা বলা ও বিবৃতি দেওয়ার জন্য বিজেপির যেসব মুখপাত্রকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদেরকেও দলের পক্ষ থেকে সতর্কভাবে মুখ খোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপি সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রসঙ্গে মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ‘ইতিহাস ঘাঁটতে যাবেন না। ভারতীয় সংবিধান অনুসরণ করে বাস্তব অবস্থা তুলে ধরুন। সমসাময়িক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলুন।’
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে জি২০ সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের রাষ্ট্রপতি ভবনে নৈশভোজের নিমন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে। নিমন্ত্রণপত্রে ভারতের রাষ্ট্রপতির দ্রৌপদী মুর্মুর পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’।
প্রসঙ্গত, ‘ভারত’নামটি ভারতে প্রচলিত থাকলেও আন্তর্জাতিক ও দাপ্তরিকভাবে এই দেশটির নাম ‘ইন্ডিয়া’। তাই যে কেনো সরকারি নথিপত্রেও ব্যবহার করা হয় ‘ইন্ডিয়া’ নামটিই।
তাই জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির আনুষ্ঠানিক নিমন্ত্রণপত্রে ‘ভারত’ নামের ব্যবহার স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনেও এই ইস্যুতে গত কয়েক দিন ধরে চলছে তুমুল আলোচনা।
বিজেপির নেতারা বলছেন, ‘ইন্ডিয়া’ নামটি ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অপরদিকে বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ— কিছুদিন আগে গঠিত তাদের নির্বাচনী জোট ‘ইনডিয়া’ কে খাটো করতেই দেশের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার।
মঙ্গলবার এই বিতর্ককে আরও উস্কে দিয়েছে বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের একটি এক্স (সাবেক টুইটার)বার্তা। নিজের এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা সেই বার্তায় ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান সম্মেলন উপলক্ষ্যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচির একটি ফটো ইমেজ পোস্ট করেছেন সম্বিত, সেখানে নরেন্দ্র মোদিকে ‘প্রাইম মিনিস্টার অব ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তারপর থেকেই ভারতের রাজনৈকি অঙ্গণে জল্পনা শুরু হয়েছে যে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতের নাম পরিবর্তন করতে চায় বিজেপি সরকার।
কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য এ ব্যাপারে এখনও কোনো ব্যাখ্যা বা প্রতিক্রিয়া দেয়নি।
সূত্র : এনডিটিভি, আনন্দবাজার
এমআইসি