Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে কুয়েত!


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৩, ০৪:৩৩ পিএম
বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে কুয়েত!

কুয়েত সিটির শুওয়াইখ সৈকতে বাসিন্দারা রোদ থেকে বাঁচতে ছাউনির নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। ছবিটি ২০২২ সালের জানুয়ারিতে তোলা। ছবি: ব্লুমবার্গ

ঢাকাঃ তাপমাত্রা যত বাড়ছে, ততই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েত। বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ খণিজ তেলের ভাণ্ডার রয়েছে দেশটিতে। ২০১৬ সালের ২১ জুলাই রাজধানী কুয়েত সিটিতে বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয়-সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নথিবদ্ধ করা হয়েছিল। ওই দিন শহরে তাপমাত্রা ছিল ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২১ সালে দেশজুড়ে ১৯ দিন তপমাত্রা ছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। তাপমাত্রার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায়, এই বছর সেই রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতি বছরই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে বার্ষিক বৃষ্টিপাত। ক্রমে শুষ্ক হয়ে উঠছে কুয়েত। বাড়ছে ধূলিঝড়ের তীব্রতা। এমন অবস্থার মধ্যে সেখানে মানুষের বাস করা অসম্ভব হয়ে উঠছে। এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার ও এক্সপ্রেস।

খবরে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার কারণে ক্রমে শঙ্কা বাড়ছে প্রাণহানিরও। ইতোমধ্য়েই কুয়েতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির মৃত্যু এবং পারস্য উপসাগরে সি-হর্সদের মৃত্যুর খবর উঠে এসেছে সংবাদ শিরোনামে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা তার বেশি তাপমাত্রা মানব জীবনেও অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ধরে এই তীব্র তাপমাত্রা সহ্য করতে হলে, তাপজনিত ক্লান্তি, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাপজনিত মৃত্যু ঠেকাতে ইতোমধ্যেই কুয়েত সিটিতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের সূর্যের প্রখর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে একটি ইন্ডোর শপিং স্ট্রিট খোলা হয়েছে। পুরো রাস্তাটিই ছাদ দিয়ে আবৃত। ভিতরে পাম গাছ এবং ইউরোপীয় শৈলির বুটিক রয়েছে। চলতি বছরেই কুয়েত সরকার রাতেও মৃতদের দাফনের অনুমতি দিয়েছে। এই প্রথম এই ধরনের কোনও আদেশ জারি করেছে দেশটি। এই পদক্ষেপের প্রধান লক্ষ্য হলো দিনের অপেক্ষাকৃত শীতল সময়ে যাতে মানুষ তাদের প্রিয়জনদের বিদায় জানাতে পারেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে তাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ৫.১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১.৭ শতাংশে পৌঁছতে পারে। আর কুয়েতিদের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান পৌঁছতে পারে ১৫ শতাংশে! 
সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, জলবায়ু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন- এই হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ কুয়েতের তাপমাত্রা আরও অন্তত ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। তখন আর এখানে বসবাসের কোনও উপায় থাকবে না। 

গত বছর ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্সের এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে তাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা ৫.১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১.৭ শতাংশে পৌঁছতে পারে। আর কুয়েতিদের ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যান পৌঁছতে পারে ১৫ শতাংশে! 


গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, কুয়েতে আগামী কয়েক বছরে সম্ভবত ঘনঘন বন্যা, খরা, উপকূলীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, ঘন ঘন বালির ঝড়, জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি, বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংস, কৃষি উৎপাদনের ব্যাপক হ্রাস এবং বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।

গত কয়েক বছর ধরেই বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং আবহাওয়া পরিবর্তন বিশেষজ্ঞদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়েছে। অবিলম্বে গ্রিন হাউস গ্যাসের পরিমাণ না কমালে বড় বিপদে পড়তে পারে বিশ্ব। এমনকী, বিশ্বের তাপমাত্রা গড়ে দুই ডিগ্রি পর্যন্ত বাড়তে পারে, এই আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে আবার দাপট দেখাচ্ছে এল নিনো। উষ্ণ সামুদ্রিক স্রোতের কারণে বৃষ্টিপাত একধাক্কায় কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এল নিনোকে এতদিন পর্যন্ত শান্ত রাখত শীতল সামুদ্রিক স্রোত লা নিনা। কিন্তু, ধীরে ধীরে লা নিনাকে থামিকে এল নিনো প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।

 

এমআইসি

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে