ঢাকাঃ পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি বাড়ছে মশাবাহিত প্রাণঘাতী রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা; আর এজন্য বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ডেঙ্গু পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভায় দেওয়া বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে এখানে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। এভাবে রোগ ছড়িয়ে পড়লে কী করা যায়? কাউকে তো ঢুকতে বারণ করতে পারি না।'
বিধানসভায় বক্তব্য দেওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সকালে ‘সবুজ বাঁচাও’ অভিযানের ডাক দিয়ে বিড়লা তারামণ্ডল থেকে নজরুল মঞ্চ পর্যন্ত পদযাত্রা করেন মমতা। সমাজের সর্বস্তরের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য এই মিছিলের শেষে বক্তৃতায় অন্য নানা প্রসঙ্গের সঙ্গে ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এ প্রসেঙ্গ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কিছু হলে এখানে তার প্রভাব পড়ে। তাই সীমান্ত এলাকাগুলিতে ডেঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ ছাড়াও সাধারণ ভাবে ডেঙ্গুর মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন করে দেন মমতা।
প্রসঙ্গত, সরকারি ভাবে এখনও স্পষ্ট করা না হলেও, বেসরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়েছে এবং এ রোগে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ৭ জন। এ কারণে চিকিৎসকেরা মনে করছেন, এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ করা খুব জরুরি। সেই সঙ্গে বেসরকারি একাধিক মেডিকেল জরিপে জানা গেছে, যেসব এলাকায় বাংলাদেশি পর্যটকদের ঘণত্ব রয়েছে, সেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এ পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, যাতে বাংলাদেশ থেকে আগততে বাধ্যতামূলক ভাবে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হয়। এই মর্মে রাজ্য সরকারকে চিঠিও দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্নের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সীমান্তে বাধ্যতামূলখ ডেঙ্গু পরীক্ষা চালুর ব্যাপারটি সরকারের বিবেচনাধীনে রয়েছে।
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বর্তমানে কলকাতায় আছেন। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে মন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, কলকাতায় প্রবেশে ইচ্ছুক বাংলাদেশি পর্যটকদের ডেঙ্গু পরীক্ষায় আপত্তি নেই ঢাকার।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতেই পারে। তাতে কোনো আপত্তি নেই। এক সময় কোভিড ১৯-এও তো নেওয়া হয়েছিল।’
এমআইসি