ঢাকাঃ যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা সামরিক সহায়তা হিসেবে ইউক্রেনে যেসব অস্ত্র ও সামরিক উপকরণ পাঠাচ্ছে,সেগুলোর কিছু অংশ নিয়মিত চুরি যাচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন।
‘ইভ্যালুয়েশন অব ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স’স (প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়) অ্যাকাউন্টিবিলিটি অব ইকুপমেন্ট প্রোভাইডেড টু ইউক্রেন’ নামের প্রতিবেদনটি শুক্রবার প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। সেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি রুশ বাহিনী ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই কিয়েভকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা এবং সামিরক জোট ন্যাটো। যে প্রতিবেদনটি শুক্রবার প্রকাশ করেছে পেন্টাগন, সেটি প্রস্তুত করা হয়েছে গত বছর মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর— ৭ মাসের পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে।
গত অক্টোবরেই এই প্রতিবেদনেটির কাজ শেষ হয়েছিল, কিন্তু সে সময় সর্বসমক্ষে তা প্রকাশ করা হয়নি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে এবং মিলিটারি ডটকম দেশটিতে প্রচলিত তথ্য অধিকার আইন ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্টের আওতায় আবেদন করার পর শুক্রবার সেটি প্রকাশ করা হয়েছে।
ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা প্রদান ও তা পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ কমিটির, যার নাম ইউএস অফিস অব ডিফেন্স কোঅপারেশন। কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, যুদ্ধের শুরু থেকেই সহায়তা হিসেবে পাঠানো সমরাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের কোনো হিসেব তারা মেলাতে পারছেন না। প্রত্যেক চালান থেকেই কিছু অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম খোয়া যাচ্ছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন তারা।
এই চুরি কারা করছে, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট ভাবে কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তাদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন ডিফেন্স কোঅপারেশনের সদস্যরা, কিন্তু কোনো কর্মকর্তা এ ব্যাপারে সদুত্তর দিতে পারেননি।
মার্কিন কর্মকর্তাদের ধারণা, ইউক্রেনের কিছু অসাধু সরকারি ও সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধী গ্রুপ, স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা এবং অস্ত্রের চোরা কারবারিদের যোগসাজশেই ঘটছে এসব চুরির ঘটনা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর জুন মাসে মার্কিন একটি অস্ত্রের চালান থেকে বেশ কয়েকটি গ্রেনেড লাঞ্চার, মেশিন গান এবং এক হাজারেরও বেশি রাউন্ড গোলাবারুদ চুরি করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেওয়া একদল যোদ্ধা।
একই মাসে ইউক্রেনীয় অপরাধীদের আর একটি চক্র বেশ কিছু বুলেটপ্রুফ ভেস্ট চুরি করেছে, যেগুলোর সম্মিলিত দাম অন্তত ১৭ হাজার ডলার। এই ভেস্টগুলো কিয়েভেকে পাঠিয়েছিল তার ইউরোপীয় মিত্ররা।
এর পর আগস্টে ইউক্রেনীয় বাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেওয়া একটি দলের সদস্যরা অন্তত ৬০টি রাইফেল এবং প্রায় ১ হাজার রাউন্ড গোলাবারুদ চুরি করে বাহিনী থেকে পালিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে পেন্টাগনের প্রতিবেদনে।
সূত্র : আরটি
এমআইসি