ঢাকাঃ বিশ্বে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা রেকর্ড এগারো কোটিতে (১১০ মিলিয়ন) পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। ইউক্রেন এবং সুদানের যুদ্ধের কারণে এই সংখ্যা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইউএনএইচসিআর বুধবার তার বার্ষিক ফোর্সড ডিসপ্লেসমেন্ট রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছর প্রায় ১৯ মিলিয়ন (১ কোটি ৯০ লাখ) লোক পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। এর ফলে গত বছরের শেষ নাগাদ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১০৮.৪ মিলিয়নে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি সাংবাদিকদের বলেন, সুদানের আট সপ্তাহের সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুতির সংখ্যাটি অন্তত ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে।
সামগ্রিক পরিসংখ্যানে এমন ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যারা তাদের নিজের দেশের মধ্যে নিরাপত্তা খুঁজছেন। সেইসাথে যারা সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থী মোট সংখ্যার প্রায় ৩৭.৫ শতাংশ। ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, আমরা একটি খুব মেরুকৃত বিশ্বে রয়েছি।
২০১১ সালে সিরিয়া সংঘাতের আগে প্রায় ৪০ মিলিয়ন (৪ কোটি) উদ্বাস্তু এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ ছিল। এটি প্রায় ২০ বছর ধরে স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে প্রতি বছরই সংখ্যাটা বেড়েই চলেছে।
এত লোকের বাস্তুচ্যুতির জন্য সংঘাত, নিপীড়ন, বৈষম্য, সহিংসতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি। ইউএনএইচসিআর এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোট শরণার্থী এবং যাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা প্রয়োজন, তাদের প্রায় অর্ধেক মাত্র তিনটি দেশ থেকে এসেছে। সেগুলো হলো- সিরিয়া, ইউক্রেন এবং আফগানিস্তান।
২০২২ সালের শেষের দিকে ১১.৬ মিলিয়ন ইউক্রেনীয় বাস্তুচ্যুত ছিল। এর মধ্যে ৫.৯ মিলিয়ন এবং বিদেশে ৫.৭ মিলিয়ন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শরণার্থীদের আশ্রয় কঠোর করার সমালোচনা করেছেন গ্র্যান্ডি।
গ্র্যান্ডি বলেন, 'আমরা (১৯৫১ শরণার্থী) কনভেনশনের নীতিগুলোকে সম্পূর্ণরূপে মেনে চলতে দেশগুলোর অনীহা লক্ষ্য করছি। অথচ তারা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৩০০ শরণার্থী নিজ দেশে ফিরে যেতে সক্ষম হয়েছিল। অন্যদিকে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩০০ জনকে তৃতীয় দেশে পুনর্বাসিত করা হয়েছিল। এটি ২০২১ সালের সংখ্যার দ্বিগুণ।
বুইউ