ঢাকাঃ প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশ। আর এই ১৭ কোটি জনংখ্যার দেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ১৬ কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার। মোট গ্রাহকের মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৪৩ লাখ ৬১ হাজার। ভয়াবহ প্রতারণা আর বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ফোনের কোটি কোটি গ্রাহক। বড় বড় ব্যবসায়ী, সরকারী পদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে গ্রামের খেটে খাওয়া শ্রমিক শ্রেণীও গ্রামীণ ফোনের আর্থিক জালিয়াতি, নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা, ইন্টারনেট প্রতারণার পরে কাষ্টমার কেয়ারের সেবা নিতে এসেও অপদস্থ হতে হচ্ছে। সার্বিক বিষয়ে আগামী নিউজ ডট কমে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
গ্রামীণ ফোনের গ্রাহকেরা সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন যে সব সেক্টরেঃ
পোস্টপেইড সিমের বিল নিয়ে প্রতারণা
গ্রামীণ ফোনের পোস্টপেইড সিমের সবচেয়ে ভিআইপি গ্রাহক হচ্ছেন প্লাটিনাম প্লাস। মূঠোফোনে সর্বাধিক অর্থ ব্যয়ের হিসেবে এই গ্রাহককে প্লাটিনাম প্লাস বলা হয়। এমনই একজন প্লাটিনাম প্লাস গ্রাহক হচ্ছেন আগামী নিউজ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ড. নিম হাকিম (নম্বরটি সংরক্ষিত)। আজ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হঠাৎ ভূতুড়ে মেসেজ এসে তার মুঠোফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মেসেজে তাঁর ব্যালেন্স ৪,৫১৭ টাকা বকেয়া দেখানো হয়। তবে তাঁর ব্যালেন্সে ৫০০০ হাজার টাকার ডিপোজিট ও ১ হাজার টাকার ক্রেডিট লিমিট থাকা স্বত্বেও মুঠোফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। হঠাৎ মেসেজ দিয়ে মুঠোফোনটির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়েন তিনি। এভাবে শুধু তিনি নন এরকম হাজারো পোস্টপেইড গ্রাহকরা এরকম প্রতারণার শিকার হচ্ছে।
ইন্টারনেট প্রতারণা
ইন্টারনেট নিয়ে ভয়াবহ প্রতারণা করছে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোন। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, অথচ অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। ছোট ছোট নানা ধরনের প্যাকেজ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, অথচ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আবার একটু ব্যবহারের পরই বলছে, মেগাবাইট শেষ হয়ে গেছে। কীভাবে শেষ হচ্ছে তার কোনো জবাবও নেই। এখন ফোরজির যুগে খোদ রাজধানীতেই মিলছে না থ্রিজি। রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় ইন্টারনেট চালু করলে হয়ে যাচ্ছে টুজি। এ পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট নিয়ে সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
রানা নামের রাজধানীর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে আগামী নিউজকে বলেন, তিনি গ্রামীণফোনের ৩৮ টাকা দিয়ে ২ জিবির একটি প্যাকেজ নেন। ৩ দিন মেয়াদি এই প্যাকেজ কেনার পর ক্ষুদে বার্তায় আসে ১.৫ গিগাবাইট ও ০.৫ গিগাবাইট ফ্রি। কিন্তু ১.৫ গিগাবাইট শেষ হলেও ০.৫ গিগাবাইট থাকা অবস্থায় ইন্টারনেট কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। শুধু ১.৫ গিগাবাইট ব্যবহার করতেই তাকে বলা হচ্ছে তার প্যাকেজ শেষ হয়ে গেছে। কীভাবে শেষ হলো তিনি বুঝতেই পারেননি।
আরেকজন গ্রাহক রতন শেখ বলেন, তিনি ৮৯ টাকা রিচার্জ করে গ্রামীণফোনের এক গিগাবাইটের একটা প্যাকেজ নেন। সেখানে শর্ত ছিল এই এক জিবির মেয়াদ হবে ৭ দিন আর বোনাস হিসেবে ফোরজি ইন্টারনেট পাবেন এক জিবি, যার মেয়াদ হবে এক মাস। অথচ তাকে ৫ দিনের মধ্যেই বলা হলো তার সব ইন্টারনেট শেষ। কীভাবে দুই গিগাবাইট ইন্টারনেট শেষ হলো তার কোনো জবাব তিনি পাননি। কোনো ধরনের ডাউনলোড বা আপলোডও তিনি করেননি। কিছু মেইল চেক করা, আর ফেসবুক দেখেন তিনি। পাশাপাশি কিছু নিউজ ওয়েবসাইট তিনি দেখেন। এতে কোনোভাবেই ৫ দিনে দুই গিগাবাইট ইন্টারনেট শেষ হওয়ার কথা না। রতন শেখ বলেন, ‘কী ব্যবহারে, কত ইন্টারনেট কাটছে এসব দেখার তো কোনো সুযোগ নেই। ফলে গ্রামীণফোন ইচ্ছেমতো ইন্টারনেট কেটে নিচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে কার কাছে অভিযোগ করব, কীভাবে প্রতিকার পাবো কিছুই বুঝতে পারছি না।’
রাজধানীর আজীমপুরের বুরহান উদ্দিন নামে আরেকজন গ্রাহক অভিযোগ করেন, বেশ কয়েকদিন আগে ১৬ টাকা রিচার্জ করে দুই দিন মেয়াদে শুধু ফেসবুক দেখতে এক গিগাবাইট ইন্টারনেট কেনেন। এটা কিনতেই তার একাউন্ট থেকে ৪ টাকা বেশি কেটে নিয়ে গেছে। এরপরও তিনি এই ইন্টারনেট ব্যবহারই করতে পারেননি। এর মধ্যেই দুই দিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাকে নতুন প্যাকেজ নিতে হয়েছে। এভাবে প্রতিনিয়তই মানুষকে ঠকাচ্ছে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীনফোন। তাদের কাছে অনেকটাই জিম্মি হয়ে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে, বিনিময়ে সেবা মিলছে না।
নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা
‘দেশের এক নম্বর শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গ্রামীণফোন’ এরকম বিজ্ঞাপন টিভি-পত্রিকায় সয়লাব। অথচ মিঃ নাসির উদ্দিনের অফিসে ঢুকলে মুঠোফোন সচল থাকলেও তা বন্ধ দেখায় কারণ নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়না অফিসে। তার অফিস মহাখলী ডিওএইচএস’এ। শুধু নাসির উদ্দিনের অফিসে না ডিওএইচএস’এ যত গুলো অফিস বা বাসা আছে সেখানে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কের অবস্থা একই রকম। বারং বার গ্রামীণফোনকে বলেও কোন সমাধান মেলেনি।
জিপি নেটওয়ার্ক সেবার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সোমা আক্তারের। তিনি আগামী নিউজকে জানান, রোকেয়া হলে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কের অবস্থা খুবই খারাপ। হলে আমরা সকলে এর ভুক্তভোগী। গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছি। ১০ বছরের পুরানো নাম্বার, না হলে কবেই সিমটা ভেঙে ফেলতাম!
দীর্ঘদিন ধরে জিপি নেটওয়ার্ক সেবা ব্যবহার করছেন বাংলা৫২নিউজ ডট কমের সম্পাদক ও প্রকাশ কাজী আওলাদ হোসেন। জিপির সেবা নিয়ে তিনি আগামী নিউজকে বলেন, আমার গ্রামীণফোনের সেবার বিভিন্ন ধরনের খারাপ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম নেটওয়ার্ক বিড়ম্বনা এর বাইরে বিনা কারণে ব্যালেন্স থেকে টাকা কেটে নেয়া, মিনিটপ্রতি নির্দিষ্ট চার্জের চেয়ে বেশি কেটে নেয়া, অপ্রয়োজনীয় মেসেজ দেয়া। মেসেজের যন্ত্রণায় মাঝে মাঝে রাতে ঘুম ভেঙে যায়।
কল ড্রপে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ১১২ কোটি ৯৫ লাখ বার কল ড্রপ হয়েছে। অর্থাৎ দৈনিক কল ড্রপের সংখ্যা ছিল গড়ে ৪৭ লাখ। কল ড্রপ ছাড়াও দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে মুঠোফোনে কথোপকথনের মাঝে বাধা সৃষ্টি হওয়ার কারণে অনেক ব্যবহারকারীকেই কল কেটে পুনরায় কল দিতে হয়েছে। করোনা মহামারির কারণে যখন অনেকেই বাসা থেকেই অফিসের কাজ করেছেন, তখন মোবাইল অপারেটরের নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক অপরিহার্য থাকলেও সেসময় কল ড্রপ ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই কল ড্রপের বেশি ভোগান্তিতে গ্রামীণ ফোনের গ্রাহকেরা। যদিও কল ড্রপের অর্থ ফেরতের কথা থাকলেও তা আর দিচ্ছে না অপারেটরা। অপারেটরটির গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৪৩ লাখ ৬১ হাজার। প্রতিদিন যদি কল ড্রপের কারণে এক টাকা করেও পায় তাহলে দিনে ৭ কোটি ৪৩ লাখ ৬১ হাজার টাকার প্রতারণা করছে অপেরটরটি।
অযাচিত ক্ষুদে বার্তায় অতিষ্ঠ কোটি গ্রাহক
দিন নাই রাত নাই হরদম চলে আসে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা। ‘এখনই অর্ডার করুন ফুড পান্ডায় ৫ শতাংশ ছাড়ে’ অথবা ;ভোট দিন অমুক ভাইকে’ কিংবা ‘ইভ্যালীর মত ই-কমার্স ব্যবসায়ের হরেক রকম পণ্যের পঞ্চাশ শতাংশ ছাড়ের বিজ্ঞাপন’। মুঠোফোন ও মুঠোফোনের নম্বর একজন গ্রাহকের ব্যক্তিগত। অথচ এই ব্যক্তিগত নম্বরে বিজ্ঞাপনের এখন প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আর এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। টেলি মার্কেটিং এ কোটি টাকার ব্যবসা হলেও দেশে এ সংক্রন্ত কোন আইন নেই। অথচ একজন গ্রাহক হিসেবে ব্যক্তিগত বিষয় থাকতে পারে। কখনো জিজ্ঞাসা করা হয়না গ্রাহকের কাছে এই প্রোডাক্টটি পাঠাতে পারবে কিনা। এভাবেই চলছে কোটি টাকার বিজ্ঞাপন মার্কেটিং এবং গ্রাহকের সাথে প্রতারণা।
সার্ভিস সেন্টারে সেবার বদলে লাঞ্চনা
পোস্টপেইড সিমের বিল নিয়ে প্রতারণার শিকার গ্রামীণ ফোনের প্লাটিনাম গ্রাহক আগামী নিউজ ডটকম এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ড. নিম হাকিম আজ বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় রাজধানীর মতিঝিলে সিটি সেন্টারে অবস্থিত গ্রামীণ ফোনের সার্ভিস সেন্টারে যান ভূতুড়ে মেসেজে তাঁর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার কারণে। কিন্তু সিটি সেন্টারে সার্ভিস সেন্টারটি তিনি বন্ধ পান। মতিঝিলের বাণিজ্যিক এলাকার এটা ছিল গ্রামীণ ফোনের বড় সার্ভিস সেন্টার। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সেন্টারটি জনতা ব্যাংকের প্রধান শাখার পিছে একটি ঘিঞ্জি গলিতে রয়েছে। পরে তিনি এই সেন্টারটিতে যান যেখানে ১০ ফিট বাই ৮ ফিট রুমের মধ্যে দেয়া সার্ভিস সেন্টারে রয়েছে গ্রামীণফোনে টি-শার্ট পরিহিত দুইজন মাত্র কাষ্টমার প্রতিনিধি যুবক। ছোট রুমে ১২/১৩ জন গ্রাহক অনেকের মুখেই নেই মাস্ক, সুযোগ নেই গ্রাহকদের সিরিয়াল দেয়ার। করোনা মহামারিতে সামাজিক দূরত্বের কথা প্রধানমন্ত্রী বারে বারে বলে আসলেও এখানে সামাজিক দুরুত্বের কোন বালাই নেই। যে যার মত কাস্টমার প্রতিনিধির কাছে বিভিন্ন সমস্যার কথা বলছেন প্রতিনিধিরা ইচ্ছে হলে উত্তর দিচ্ছেন, ইচ্ছে না হলে সন্ত্রাসী কায়দায় বের করে দিচ্ছেন গ্রাহকদের। কেউ কোন প্রতিবাদ করলে হেড অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করার কথা বলছেন। সেবা নিতে এসে এভাবে লাঞ্চনার শিকার হয়ে হতবম্ভ হয়ে পড়েছেন অনেক গ্রাহক।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারিতে গ্রামীণফোনের প্রায় ৩০ শতাংশ কর্মী চাকরি হারিয়েছে। আর এর পরই বড় বড় কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার বন্ধ করে দিয়ে অপারেটরটি ছোট ছোট ঘিঞ্জি এলাকায় নিয়েছেন তাদের সার্ভিস সেন্টার বা এজেন্ট এবং দুই তিন জন প্রতিনিধি/এজেন্ট দিয়ে চলছে তাদের সেবা। যেখানে সেবা নিতে গিয়ে লাঞ্চনার শিকার হচ্ছেন গ্রাহকেরা।
সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি
প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি (বিটিআরসির ৮ হাজার ৪৯৪ কোটি ও এনবিআরের ৪ হাজার ৮৬ কোটি) টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে গ্রামীণফোন লিমিটেডকে ২০১৯ সালের ২ এপ্রিল চিঠি দেয় বিটিআরসি। ওই পাওনা দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে ও পাওনা দাবির অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চায়। এখানে কোন তদবির করতে না পেরে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে গ্রামীণফোনের সিংহভাগ শেয়ারের মালিক টেলিনর রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠায়। এই নোটিশে ১২ হাজার কোটি টাকা পাওনার বিষয়টি নিয়ে সালিস (আরবিট্রেশন) চাওয়া হয়েছে। নইলে টেলিনর আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবে। একদিকে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা লোপাট করে যাচ্ছে গ্রামীণফোন অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আইনি নোটিশ পাঠায়। গ্রামীণফোনের জন্ম থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অডিট করে বিটিআরসি। বেসরকারি অডিটদের করা ওই নিরীক্ষায় অপারেটরটির কাছে ১২ হাজার ৫৯৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কমিশনের পাওনা বলে উঠে আসে। কত বড় সাহস হলে রাষ্ট্রপতিকে আইনি নোটিশ দিতে পারে একটি কোম্পানি । একদিকে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা লোপাট করছে অন্যদিকে তারা এতো বড সহস পেল কি করে যে সরকারের পাওনা টাকা না দিয়ে উল্টো মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে আইনি নোটিশ পাঠালেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে গ্রামীণ ফোনের হেল্পলাইন ‘১২১’ এ কল করা হলে কর্তব্যরত কাষ্টমার প্রতিনিধি বলেন, আপনার ব্যক্তিগত কোন নম্বরে কোন সমস্যা হলে আমাকে বলেন আমরা সেটি দেখে সমাধান করে দিচ্ছি। তবে সামগ্রিক বিষয়ে নিয়ে কথা বলতে চাইলে তাদের কর্পোরেট কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে কর্পোরেট কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্ট অফিসের +৮৮-০২-২২২২৮২৯৯০ ও +৮৮০-১৭৯৯৮৮২৯৯০ নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) এর ডেপুটি ম্যানেজার জাকির হোসেন আগামী নিউজ ডটকমকে বলেন, এরকম ছোট ছোট অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে এর আগেও এসেছে। আমরা এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। তবে আপনি যে বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন করলেন এই অভিযোগ গুলো অনেক বড় বিষয়। আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত করব। শুধু গ্রামীনফোন নয় যে কোন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি যদি গ্রাহকদের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে তবে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় তাহলে শাস্তিস্বরূপ জরিমানাসহ লাইসেন্স বাতিল করার সম্ভাবনা আছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, গ্রাহকরা মুঠোফোন অপারেটরদের যেকোন প্রতারণার শিকার হলে আমাদের হেল্প লাইন নম্বর ‘১০০’ তে কল করে অভিযোগ দিলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিব এবং আমাদের ওয়েবসাটি বিটিআরসি’তে (http://www.btrc.gov.bd/) গিয়ে অভিযোগ ফরম পূরণের মাধ্যমে যে কেউ অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।
আগামীনিউজ/এএইচ