ঢাকাঃ আসছে জানুয়ারিতে ভারতের খ্যাতিমান চলচ্চিকার মৃণাল সেনের বায়োপিকের শুটিং শুরু করবেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। জানা গেছে, এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করবেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। এ প্রসঙ্গে সৃজিত বলেন, বায়োপিক বা ওই ধাঁচের ছবি আগেও করেছি। যেমন শাবাশ মিঠু বা ভাওয়াল সন্ন্যাসীকে নিয়ে। কিন্তু নিঃসন্দেহে এটা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং!
এ সিনেমাটির প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। যিনি ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, মৃণালের প্রয়াণদিবসে তারা এই সিনেমাটির ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন। এদিকে সৃজিত সিনেমার একটি পোস্টার তার ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, সৃজিত এই জীবনীচিত্রটি করতে চেয়েছিলেন ওয়েব সিরিজে। করোনা মহামারির লকডাউনের সময় তিনি চিত্রনাট্য লিখেও ফেলেছিলেন। তারপরে সিনেমাটি বানানোর সিদ্ধান্ত নেন। স্বভাবতই সিরিজের তুলনায় দৈর্ঘ কমাতে হয়েছে। সৃজিতকে সাহায্য করেছেন মৃণালের পুত্র কুণাল সেন। যাকে মৃণাল ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করতেন। কুণাল সৃজিতকে সিনেমাটি নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। সৃজিত-কুণাল নিরন্তর যোগাযোগও আছে।
তবে মৃণালের ভূমিকায় চঞ্চলকে নেওয়া নিঃসন্দেহে বড় পদক্ষেপ। সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। কেনো চঞ্চল চৌধুরী? সৃজিতের ভাষ্য, প্রথমত দুজনের মুখের মিল আছে। সেটা কাকতালীয়। কিন্তু মৃণালবাবুর মতোই চঞ্চলের চোখের দৃষ্টি অত্যন্ত ধারালো এবং সজাগ। তাছাড়াও মৃণালবাবুর রাজনীতি চেতনা, তার যাপন এবং দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও চঞ্চলের প্রচুর মিল। সেটা কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু মিলটা আছে।
সিনেমাতে অবশ্য মৃণালের ব্যক্তিগত এবং পরিচালনার জীবনই বেশি থাকবে। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে তার বানানো কলকাতা ট্রিলজি ছবির অনেকটাজুড়ে থাকবে। ছবিতে থাকবেন মনামী ঘোষ এবং সম্রাট চক্রবর্তীও।
মৃণাল জন্মেছিলেন ১৯২৩ সালের ১৪ মে। তিনি সিনেমা বানিয়েছিন বাংলা, হিন্দি এবং তেলুগু ভাষায়। তার নাম পরিচালক হিসেবে বাংলার সর্বকালীন সেরাদের মধ্যে অন্যতম বলে পরিগণিত হয়। ‘পদ্মভূষণ’ থেকে ‘দাদাসাহেব ফালকে’— সবই রয়েছে তার ঝুলিতে। ভুবন সোম, মৃগয়া, আকালের সন্ধানে, খারিজ, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন— এসবই তার অন্যতম সৃষ্টি। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। ১৯৫৫ সালে ‘রাতভোর’ থেকে ২০০২ সালের ‘আমার ভুবন’— মাঝে রয়েছে মৃণালের অসংখ্য সিনেমা।
সেই মৃণালের জীবনীচিত্রে তার ভূমিকায় অভিনয় করবেন চঞ্চল। সম্প্রতি যার দুইপর্বের ‘কারাগার’, ‘তকদির’-এর মতো ওয়েব সিরিজ় এবং ‘হাওয়া’র মতো সিনেমা বাংলাদেশের ও পশ্চিমবঙ্গের দর্শকের প্রশংসা পেয়েছে।
বুইউ