Dr. Neem on Daraz
Victory Day

নবম দিনের মতো শিক্ষকদের অবস্থান, যোগ দিলেন মাদরাসা শিক্ষকরাও


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২৩, ০১:১৭ পিএম
নবম দিনের মতো শিক্ষকদের অবস্থান, যোগ দিলেন মাদরাসা শিক্ষকরাও

ঢাকাঃ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে নবম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। বুধবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। 

গত ১১ জুলাই থেকে মাধ্যমিক শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক আটকে কর্মসূচি করে আসছেন। এবার তাদের আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বেসরকারি মাদরাসার শিক্ষকরাও। এতে আগের চেয়েও কর্মসূচিতে শিক্ষকদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। পল্টন থেকে হাইকোর্ট অভিমুখী সড়ক বন্ধ করে কর্মসূচি করছেন তারা। এতে ওই সড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে বসে বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষক নেতারা। আর কদম ফোয়ারা থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত শিক্ষকরা অবস্থান করে হাততালি ও স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের এই আন্দোলনের ফলে তোপখানা সড়কের পল্টন-কদম ফোয়ারা এবং কদম ফোয়ারা-পল্টন মোড় অংশে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে এই পথে চলাচল করা যানবাহনগুলোকে আব্দুল গণি সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করতে হচ্ছে। আর ভোগান্তিতে পড়ছেন ওই পথের যাত্রীরা।

শিক্ষক নেতারা বলেন, আজ নবম দিনের মতো আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ যোগাযোগ করেনি। আজ নয় দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলছে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। অবিলম্বে দাবি মেনে নিয়ে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে দিন।

তারা বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।

তারা আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয়। তাছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল না দেওয়ায় উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান। এতে সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।

শিক্ষকরা বলছেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বেতন স্কেলের একধাপ নিচে প্রদান করা হয় এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল প্রদান না করার ফলে উচ্চতর স্কেলপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সমান হওয়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে।

রাজবাড়ী থেকে আসা মাদরাসা শিক্ষক তবিবুর রহমান বলেন, মাধ্যমিকের শিক্ষকরা যে দাবিতে আন্দোলন করছেন, তাতে আমাদের সমর্থন ছিল। এবার আমরা ঢাকায় এসে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাদরাসা শিক্ষকরা আন্দোলনে থাকবেন, এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বরিশাল থেকে গত শনিবার ঢাকায় এসেছেন শিক্ষক জয়দেব অধিকারী। তিনি এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে প্রতিদিন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। জয়দেব অধিকারী বলেন, আমাদের এ দাবি দীর্ঘদিনের। ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে আমাদের এ বৈষম্য দূর হবে না। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বৈষম্য দূর করতে হবে। সরকার যত দ্রুত দাবি মেনে নেবে, তত দ্রুত আমরা ক্লাসে ফিরতে পারবো। তা না হলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে, যা আমরা চাই না।

বাসযাত্রী জোবায়ের হাসান জয় বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা বন্ধ। তাই মৎস্যভবন পর্যন্ত রাস্তা জ্যাম হয়ে গেছে। শুনলাম এই বাস সচিবালয়ের সামনে দিয়ে ঘুরে জিরো পয়েন্ট মোড়ে যাবে। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে আবার অফিসে আসতে হবে আমাকে। শহরে এরকম আন্দোলন-সমাবেশ সত্যিই ভোগান্তির।

অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি তদারকিসহ মাউশির ৫ দফা নির্দেশনার চিঠি প্রত্যাহারের দাবি উঠে আসছে কর্মসূচি থেকে। শিক্ষক নেতারা এ চিঠি প্রত্যাহারে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। অন্যথায় সব শিক্ষককে ঢাকায় এনে আন্দোলন আরও বেগবান করার কথা বলছেন।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে