ঢাকাঃ দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে নতুন করে দুই হাজার ৭১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় রয়েছে দুই হাজার ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এছাড়া কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় ৬৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে।
বুধবার (৬ জুলাই) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির বিষয়ে জানান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি জানান, এ ধাপে দেশের মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ৩২ উপজেলার একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির অনুমোদন পায়নি। এছাড়া সিটি করপোরেশনভুক্ত ২২টি থানার একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির অনুমোদনের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
ডা. দীপু মনি আরও জানান, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ক্ষেত্রে ১৮টি, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২১৩টি এবং মাদরাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১৫২টি উপজেলা থেকে এমপিওভুক্তির জন্য কোনো আবেদন পাওয়া যায়নি।
এদিকে কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে ২২৩টি ও মাদরাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০০টি উপজেলা থেকে একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির অনুমোদনের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আবেদন করেছে কিন্তু এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা উপজেলাগুলোর অন্তত একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি শিক্ষা এবং মাদরাসা শিক্ষার যে কোনো একটিকে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় স্বীকৃতি/স্বীকৃতির সুপারিশ রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে।
আঞ্চলিক অসামঞ্জস্য দূরীকরণের জন্য মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ের ২৯টি, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনা করা হয়েছে। শিক্ষায় পশ্চাৎপদতা, অনগ্রসরতা বিবেচনায় নিয়ে এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা মোট ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাছাই করা হয়েছে। প্রতিটির জন্য শিথিল করা শর্ত এবং বাছাইয়ের যৌক্তিকতা উল্লেখ করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬৬৬টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এক হাজার ১২২টি, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৩৬টি, উচ্চমাধ্যমিক কলেজ ১০৯টি ও ডিগ্রি কলেজ ১৮টি।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসএসসি ভোকেশনাল অথবা দাখিল ভোকেশনাল ৯৭টি, এসএসসি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি ২০০টি, ডিপ্লোমা ইন অ্যাগ্রিকালচার ২টি, দাখিল মাদরাসা ২৬৪টি, আলিম মাদরাসা ৮৫টি, ফাজিল মাদরাসা ৬টি ও কামিল মাদরাসা ১১টি।
এর আগে সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এসব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন। তিনি জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে আজই তা জানাবে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিকে সহায়তা করতে চার সদস্যের একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়।
আবেদনকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্তির জন্য প্রাথমিক তালিকা করে এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটি। এই তালিকা শিক্ষামন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রীর অনুমোদনের পর এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন শেষে এটি চূড়ান্ত করা হয়।
২০১৯ সালে দুই হাজার ৬২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার পর নতুন করে আর কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি।
এমবুইউ