কুষ্টিয়াঃ করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিতে শুরু করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক (ইবি) শিক্ষার্থীরা। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করে নিজ নিজ এলাকা থেকে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বেলা ১২ টার দিকে নিজ এলাকা নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান।
তিনি আগামী নিউজকে বলেন, 'ভ্যাকসিন নিতে কিছুদিন আগে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম পুরণ করি। পরে নির্দেশনা মোতাবেক সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করি। বিভাগে আমার শিক্ষাবর্ষের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে আজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করলাম। নিজের মধ্যে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে। দ্রুত টিকা কার্যক্রম শুরু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।'
পঞ্চগড় থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান। তিনি আগামী নিউজকে বলেন, ‘সরকারের কার্যকরী সিদ্ধান্তের সাথে তাল মিলিয়ে টিকা গ্রহণ করলাম। শুধু এটাই যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। নিজের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে নিজেকে আরো বেশী খেয়াল রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি আরো বেশী জোড়ালো করতে হবে।’
বরিশাল থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন। তিনি আগামী নিউজকে জানান, ‘প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় লাগছিল বিভিন্ন গুজব শুনে। তারপরও সাহস করে গেলাম টিকা নিতে। ব্যথা লাগার যেই ব্যাপারটা আগে শুনেছিলাম,তা আমি মোটেই অনুভব করিনি। আলহামদুলিল্লাহ, এখন কিছুটা হলেও সেফ লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ, আমাদের জন্য টিকা গ্রহণ সহজ করে দেওয়ার জন্য।
এর আগে গত ২রা জুলাই ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা অ্যাপে এনআইডি নম্বরসহ নিবন্ধনের নির্দেশ দেয় ইবি কর্তৃপক্ষ। তবে নির্দেশনার পর সঠিক তথ্য পুরণ করে বারবার নিবন্ধনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। পরে গত ১১ই জুলাই ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে ইবি কর্তৃপক্ষ। তালিকায় যেসব শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ নেই তাদের পুণরায় ওয়েবাসাইট থেকে নিবন্ধনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, টিকা সরবরাহকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হবে।’
এসময় তিনি বলেন আরও, 'বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত তালিকায় যাদের নাম নেই কিংবা ইতিপূর্বে যারা নিবন্ধন করেনি তাদের দ্রুততম সময়ে নির্ধারিত গুগল ফর্মে নিবন্ধন করতে বলা হচ্ছে। যাদের জাতীয়পরিচয় পত্র নেই তারা আপাতত নিবন্ধন করতে পারছে না। সে ব্যপারে সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। সিদ্ধান্ত এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে গত ২রা মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে তালিকা চেয়েছিল প্রশাসন। পরে গত ১৪ই মার্চ আবাসিক ও অনাবাসিক সকলের তালিকা চেয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে কর্তৃপক্ষ। তবে আবেদন কম হওয়ায় তৃতীয় বার ২৫শে মে পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ চতুর্থ বারেরমতো ৩০শে মে পর্যন্ত আবেদনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজার ৩৮৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে টিকা নিতে আবেদন করে মোট ৬ হাজার ৬০৭ জন শিক্ষার্থী।