Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ইবি শিক্ষার্থীকে চড় মারলেন সহকারী প্রক্টর


আগামী নিউজ | এম.বি রিয়াদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২১, ০৮:০৭ পিএম
ইবি শিক্ষার্থীকে চড় মারলেন সহকারী প্রক্টর

ছবিঃ সংগৃহীত

কুষ্টিয়াঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহকারী প্রক্টর ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের আবাসিক হল সংলগ্ন রাস্তার আমগাছ থেকে আম পাড়ার অভিযোগে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এসময় ঐ শিক্ষার্থী এবং বিভাগের এক মেয়েকে (ঐ শিক্ষার্থীর স্ত্রী) বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আটকে রাখা হয়। পরে সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম এসে ঘটনাটি সমাধান করেন বলে জানা যায়।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের হাসান নামের এক শিক্ষার্থী (২০১৯-২০ মাস্টার্স) ও তার স্ত্রীসহ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। তারা ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়াতে একটা ভাড়া বাসায় থাকেন। ক্যাম্পাসের মফিজ লেক এলাকা থেকে কিছু শাক সবজি নিয়ে বাসার দিকে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তারা ক্যাম্পাসের মেয়েদের হল সংলগ্ন এলাকায় আসেন। এসময় হাসান ইফতারির পর খাওয়ার জন্য কিছু আম পাড়তে রাস্তার পাশের একটি আমগাছে ওঠেন।

এসময় গাছের নিচে হাসানের স্ত্রী ও তাদের বাড়িওয়ালার মেয়ে (৯ বছর) আম কুড়াচ্ছিল। হাসান গাছে থাকা অবস্থায় সহকারী প্রক্টর আরিফ শিক্ষক কোয়ার্টার থেকে সেদিকে যায়। এসময় তিনি গাছে কে? কে আম পাড়ে ইত্যাদি প্রশ্ন করেন। জবাবে হাসান ও তার স্ত্রী বলেন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তাদের বিভাগের ও সেশনের পরিচয় দেন। এসময় সহকারী প্রক্টর আরিফ ঐ শিক্ষার্থীকে (হাসানকে) বকাঝকা করতে থাকে। এক পর্যায়ে থাপ্পড় মারেন এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে তিনজনকেই আটকে রাখেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী হাসান বলেন, আমি যখন গাছ থেকে আম পাড়ছিলাম তখন আরিফ স্যারের কণ্ঠ শুনতে পায়। তিনি এসে কে রে তুই আম পাড়িস?, নাম গাছ থেকে। এসময় আমি গাছ থেকে নেমে আসি। তিনি বলেন, তোরা আম পাড়লি কেন? কারা তোরা? এসময় আমারা আমাদের বিভাগ ও সেশনের পরিচয় দেই। তখন তিনি বলেন তোরা আমসহ দাঁড়া তোদের ছবি তুলবো এবং কাকে যেন ফোন দিলেন। আমি তখনও জানতাম না তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমরা বললাম আমাদের ভুল হয়েছে আর কোনদিন আম পাড়বো না। এরপর তিনি বলেন তোরা কি ক্যাম্পাসে অরাজকতা পাইছিস? তোদের জন্য ক্যাম্পাসে কোন কিছু থাকে না ইত্যাদি। একপর্যায়ে তিনি আমাকে একটি চড় মারেন এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আনসারকে ডেকে আমাদের হলের ভিতর আটকে রাখেন।

এসময় আমরা একাধিকবার তার কাছে নিজেদের ভুল স্বীকার করলেও তিনি আনসারকে তার একটা মিটিং আছে বলে কোথায় যেন চলে যান। কিছুক্ষণপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম স্যার আসেন এবং সমস্ত বিষয় শোনেন। আমরা ক্যাম্পাসে ঘুরছিলাম এটা তিনি ঐ ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও দেখেছিলেন। আমি এসময় শফিকুল ইসলাম স্যারের কাছে জিজ্ঞাসা করি ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা ক্যাম্পাসের ফল খেতে পারি কিনা? তিনি বলেন অবশ্যই ক্যাম্পাসের ফল তো তোমাদের জন্যেই। এসময় তিনি আরিফ স্যারকে ডেকে আমাকে মারা ঠিক হয়নি বলেন। আরিফ স্যার ঐ সময় স্বীকার করেন যে তিনি রাগের মাথায় আমাকে মেরেছেন। পরে শফিকুল ইসলাম স্যার আমাদেরকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বলেন এবং বিষয়টি ওখানেই মিটিয়ে দেন।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর আরিফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি সকালেই অন্য একটি মাধ্যমে সংবাদটি জানতে পারি এবং ঘটনাটির তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য সহকারী প্রক্টর শফিককে সেখানে পাঠিয়েছি। আসলে সহকারী প্রক্টর আরিফ যে কাজটি করেছে সেটি ঠিক হয়নি। ইতোমধ্যে ঐ ছাত্র এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য আমাকে একটি আবেদনপত্র পাঠিয়েছে। বিষটি নিয়ে আমরা আগামীকাল আলোচনা করবো।

আগামীনিউজ/এএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে