নান্দনিক শিল্পকলার অনন্যনিদর্শন ইবির ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব`
আগামী নিউজ | এম.বি রিয়াদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২১, ০৭:১৭ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ
কুষ্টিয়াঃ 'বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও সাহসী নেতৃত্বের জন্য পেয়েছি এ দেশ। তাঁর স্মৃতির স্মরণে নির্মাণ করা হয়েছে ম্যুরাল 'মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব'। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যকে যেমন বাড়িয়েছে তেমনি বাড়িয়েছে বঙ্গবন্ধুকে জানার আগ্রহও। দেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর এরকম ম্যুরাল নেই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে, এজন্য আমরা গর্বিত।’ এমনটাই মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স আ্যন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ।
বলছিলাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ক্যাম্পাস ভিত্তিক সর্ববৃহৎ ম্যুরাল ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ সম্পর্কে। যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে সামনে তাকালেই দেখা যাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি স্মরণে নির্মিত এ ম্যুরালটি। এটা এতই দৃষ্টিনন্দন যে, গুগল সার্চে শীর্ষে রয়েছে।
২০১৮ সালের ৭ই জানুয়ারি ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ম্যুরালটির মূল পরিকল্পনাকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী। ম্যুরালটির নকশা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আলিমুজ্জামান টুটুল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জালাল উদ্দীন তুহিনের যৌথ অর্থায়নে এটি স্থাপন করা হয়। ম্যুরালটি নির্মাণ খরচ প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। শৈল্পিক কারুকার্যের রূপ দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কনক কুমার পাঠক।
খোদাই করা পাথর ও টাইলসের তৈরি ম্যুরালটির মূল স্থাপনার দৈর্ঘ্য সিঁড়িসহ ৫০ ফুট এবং প্রস্থ ৩৮ ফুট। বেদির উচ্চতা ৫ ফুট। বেদির ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দৈর্ঘ্য ২৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৭ ফুট। এর তিনটি সিঁড়ি রয়েছে। সিড়িগুলো উন্নতমানের সিরামিক দ্বারা সুসজ্জিত করা। স্থাপনার তিন দিকে দর্শনার্থীদের চলাফেরার জন্য দুই স্তরের ১৫ ফুট চওড়া জায়গা রয়েছে। মূল বেদির উপর আড়াই ফুট উচ্চতা এবং ২০ ফুট চওড়া একটি দেয়াল স্থাপন করা হয়েছে। মূল প্রতিকৃতির ডান পাশে ৪ ফুট চওড়া ও ২০ ফুট উচ্চতার একটি ওয়াল রয়েছে। যাতে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর করা একটি ইংরেজি বাণী লিপিবদ্ধ করা আছে।
এই বাণীর ঠিক নিচেই রয়েছে বাংলায় অনুবাদ। যাতে লেখা ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়ে ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত, তা আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এ নিরন্তন সম্পত্তির উৎস ভালোবাসা। অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’
ম্যুরালটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত। মহাসড়কের পাশে হওয়ায় যাতায়াতকারীরাও চলার সময় তাকিয়ে থাকে নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। এছাড়াও বিভিন্ন পিকনিক স্পটে যাওয়ার সময় মূল ফটকে গাড়ি থামিয়ে ম্যুরালটির সৌন্দর্য উপভোগ করেন পর্যটকরাও।
আগামীনিউজ/এএস