ঢাকাঃ প্রতারণার মামলার পর অনলাইন শপ ধামাকার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব বলেছে, ধামাকার বৈধ কোনো কাগজই ছিল না,এই নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্সও নেই।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন,ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ধামাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলত। ধামাকা ছিল ‘ব্র্যান্ড’ নাম।
“তবে ধামাকার নামে কোনো ব্যাংকে হিসাব নেই, এই নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্সও নেই। তাদের মাইক্রোট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড এবং মাইক্রোট্রেড আইসিক্স লিমিটেড নামে আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে।”
ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের মালিকরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর মঙ্গলবার প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ধামাকার চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিওওসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী থানায় মামলা করেন এক গ্রাহক।
এরপর মঙ্গলবার রাতে ধামাকার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সিরাজুল ইসলাম রানাসহ তিনজন গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন র্যাব কর্মকর্তারা।
ঢাকার তেজগাঁও এলাকা থেকে রানার সঙ্গে ইমতিয়াজ হাসান সবুজ (৩১) এবং ইব্রাহিম স্বপন (৩৩)নামে অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কমান্ডার আল মঈন বলেন, “আর্থিক সঙ্কটের কারণে গত কয়েক মাস প্রতিষ্ঠানের (ধামাকা) অফিস এবং ডিপো ভাড়া বকেয়া রয়েছে।
“পাশাপাশি জুন থেকে কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে। এছাড়া ধামাকার জন্য অর্থ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার কারণে জুলাই থেকে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।”
গ্রাহক ও পণ্য সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোর কাছে ধামাকার প্রচুর বকেয়া থাকার তথ্য তুলে ধরা হয় র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে।
আল মঈন বলেন, যারা ধামাকাকে পণ্য দেয়, তাদের বকেয়া ১৮০ থেকে ১৯০ কোটি টাকা। সাধারণ গ্রাহক যারা পণ্য অর্ডার দিয়ে পায়নি, সেসব গ্রাহকদের বকেয়া ১৫০ কোটি টাকা। আবার পণ্য না দিয়ে চেক দিলেও ব্যাংক থেকে তা ফেরত এসেছে, এমন গ্রাহক পাবেন ৩৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, তারা মোবাইল ফোন, টিভি, ফ্রিজ, মোটরবাইক, গৃহস্থালি পণ্য ও ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য লোভনীয় অফারে বিক্রি করত।
“মাত্র শতকরা ২০ ভাগ পণ্য সরবরাহ করে ধীরে ধীরে সকল অর্থ সরিয়ে গ্রাহকদের চেক প্রদান করে প্রতারণা করত।”
ধামাকার প্রধান কার্যালয় মহাখালীতে, তেজগাঁও বটতলা মোড়ে একটি ‘ডেলিভারি হাব’ রয়েছে তাদের।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা র্যাবকে জানিয়েছেন, ধামাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসীম উদ্দীন চিশতী বিদেশে চলে গেছেন।
“তারা মনে করে, তাদের এমডি দেশের বাইরে চলে গেছেন। তবে তাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে,” বলেন র্যাব মুখপাত্র।