ঢাকাঃ চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিলো, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গতি–প্রকৃতি বিবেচনা করে তিন মাসে পরেই এ পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ করলো বিশ্বব্যাংক।
বুধবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস স্প্রিং ২০২১: সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেটস’ প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখনো ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা যেমন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে, আবার পরিবর্তিত করোনা পরিস্থিতিতে সরকারকে কী ধরনের নীতি গ্রহণ করতে হয়, তাও আরেক ধরনের অনিশ্চয়তা।
২০২১ ও ২০২২ সালের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদান করতে হলে ৪৪ থেকে ১৮৮ কোটি ডলার লাগবে। আর সেটি সম্ভব হলে নতুন অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলেও জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
সংস্থাটি মনে করে, দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু হয়ে গেছে। নিরাপদ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথ হলো টিকা প্রদান। ২০২০ সালের দ্বিতীয়ার্ধে করোনাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিধিনিষেধ উঠিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে হাঁটতে শুরু করে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশ উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্বব্যাংকের ওয়াশিংটন কার্যালয় থেকে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, করোনার কারণে বহু লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। এমন অবস্থায় নিরাপদ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথ হলো টিকা প্রদান। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশকে টিকা কেনার অর্থ দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক দক্ষিণ এশিয়ার সব মানুষের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ হ্যানস টিমার বলেন, বাংলাদেশের বিপদ এখনো কাটেনি। এখনো অনেক অনিশ্চয়তা আছে। গত দুই প্রান্তিকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে নানা ধরনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে সমস্যা অতিক্রম হয়েছে। কেননা, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় কত লোক কোভিড-১৯–এ সংক্রমিত হচ্ছেন, তা নির্ধারণ করা কঠিন। সরকারি তথ্য–উপাত্তে যে সংখ্যা দেখানো হয়, তা সংক্রমিত ব্যক্তির প্রকৃত সংখ্যা নয়।
এদিকে চলতি অর্থবছর শেষে অতি দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
আগামীনিউজ/এএস