ঢাকাঃ আমেরিকার ভিসানীতি দেশের পোশাক রফতানিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক মালিক ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
আকু পেমেন্টে কয়েকটি ব্যাংককে স্যাংশন দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেকোনো স্যাংশন দিলেই তা শংকিত হওয়ার। এরপরও ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন, আকু পেমেন্ট অন্য কোনোভাবে পেমেন্ট করা যাবে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমেরিকার ভিসানীতিটা যে কারোর ওপর হতে পারে। আমি গত ৩০ বছর ধরে ৫ বছর করে ভিসা পাই। এরপরও আমি আমেরিকা যাওয়ার পর আমাকে বলতে পারে তোমার ভিসা বাতিল করা হলো। এভাবেও কারো ভিসা বাতিল করা হয়।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কারো ভিসা বাতিল হলেও সে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবেন। আমরা কোভিড সময়ে কোনো দেশে যেতে পারিনি। এরপরও আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়নি। সেক্ষেত্রে বলা যায় ভিসা বাতিল হলেও বিকল্পভাবে সে তার ব্যবসা চালিয়ে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
এসময় লিখিত বক্তব্যে ফারুক হাসান বলেন, আমরা রফতানি বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, এগুলো নিয়ে কাজ করেই যাচ্ছি। একইসঙ্গে আমরা ইনোভেশন বা উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করছি, ডাইভার্সিফিকেশন নিয়ে কাজ করছি। আমরা মনে করি আমাদের বিগত ৪৫ বছরের ইতিহাসে দেশে ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রির একটি ভিত্তি তৈরি করেছে। আগামী দশকে আমাদের যে উত্তরণটা হবে, সেটা কিন্তু ৪৫ বছরের বিজনেস মডেল ফলো করে করলে হবে না - আগামী দশকে টিকে থাকার জন্য আমাদের ইনোভেশন ও ইম্প্রুভাইজেশন দরকার হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আমাদের এখানে ইনোভেশন সেন্টার ও ফিউচার সেন্টার স্থাপন হয়েছে, যেখানে আমরা আমাদের সদস্য কারখানাগুলোকে তথ্য/জ্ঞান দেওয়া থেকে শুরু করে তাদেরকে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত করার ধারাটির সূচনা করেছি। আমরা বিজিএমইএকে একটি ফিউচারিস্টিক বিজিএমইএ হিসেবে তুলে ধরার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ কাজে দেশি বিদেশি সমস্ত স্টেক হোল্ডারদেরকে আমাদের সাথে সম্পৃক্ত করছি।
তিনি আরও বলেন, এরকম একটি সংকটময় পরিস্থিতিতে বাজার ধরে রাখার জন্য আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো ব্যবসা সহজীকরণের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি, আমাদের সরকারও শিল্পের স্বার্থে বিভিন্ন সময় ব্যবসাবান্ধব, রফতানিবান্ধব বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং শিল্প উপকৃত হয়েছে। তারপরেও আমাদের কারখানাগুলো মূল্যভিত্তিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে প্রচন্ড সংগ্রাম করছে। এ পরিস্থিতিতেও কাস্টমস এবং বন্ডের সমস্যাগুলো আমাদের চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। বিগত সময়ে আমরা কাস্টমস ও বন্ড কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ কিছু সভা করেছি। তাদেরকে কাস্টমস এবং বন্ড পদ্ধতিগুলোর জটিলতাগুলো নিরসনের অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে যখনই সুযোগ পেয়েছি, তাদের কাছে সমস্যাগুলো তুলে ধরেছি।
পোশাক শিল্প ফ্যাশন ও টাইম বাউন্ড শিল্প উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাস্টমস বন্ড পদ্ধতিগুলোকে সুবিন্যস্ত করা হলে তা লিড টাইম সংক্ষিপ্ত করবে এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। আমরা দেখছি কাষ্টম হাউজ এবং বন্ড কমিশনারেটে নিচের দিকের কতিপয় কর্মচারীরা সময়ক্ষেপন করে, উদ্যোক্তাদের আর্থিকভাবে হয়রানি করে। এটার নিরসন হওয়া দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি শহিদুল্লা আজিম, সাবেক সভাপতি সালাম মুর্শিদী, সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রমুখ।
এমআইসি