Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ব্যাংক ঋণের বিপরীতে ৪৪ ধরনের চার্জ


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২০, ০৮:২২ এএম
ব্যাংক ঋণের বিপরীতে ৪৪ ধরনের চার্জ

ঢাকাঃ ব্যাংক খাতে ঋণে সিঙ্গেল ডিজিট (এক অঙ্ক) বাস্তবায়নের নামে চলছে ‘শুভংকরের ফাঁকি’। এক অঙ্ক বললেও কাজের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ব্যাংক থেকে আরোপিত সুদের পাশাপাশি গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে কমপক্ষে ৪৪ ধরনের ‘সিডিউল অব চার্জ’। এর মধ্যে শুধু আমদানি-রফতানিতেই কাটা হচ্ছে ২৯ ধরনের চার্জ বা কমিশন।

এছাড়া দেশীয় পর্যায়ে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে ১২-১৫ ধরনের মাশুল দিচ্ছেন সাধারণ গ্রাহক। এর বাইরে রয়েছে আরও অনেক হিডেন চার্জ, যা গ্রাহক কোনো দিন জানতেও পারেন না। এছাড়া ক্রেডিট কার্ডের সার্ভিস চার্জ তো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সব মিলিয়ে বাস্তবে ব্যাংক ঋণের সুদহার এখনও ১০ থেকে ১৮ শতাংশ পড়ছে বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।

তাদের মতে, ঋণের সুদহার কমালেও সার্ভিস চার্জ ডাবল করে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। এতে ক্ষেত্র বিশেষে সুদের হার ১৭-১৮ শতাংশ হয়ে যাচ্ছে। জানতে চাইলে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, সুদের হার নিয়ে শুভংকরের ফাঁকি চলছে। বর্তমানে ঋণের সুদ কাগজে-কলমে ৯ শতাংশ।

কিন্তু বাস্তবে ১২-১৮ শতাংশ পড়ছে (প্রণোদনা ঋণ এ হিসাবের বাইরে)। কারণ এখন সার্ভিস চার্জ ডাবল করে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, পার এলসিতে আগে ২০ পয়সা কমিশন কাটলে এখন কাটে ৪০ পয়সা। আর আগে ৪০ পয়সা কাটলে এখন ৮০ পয়সা কাটছে। এতে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। সে হিসাবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঋণের সুদ আগের চেয়ে বেড়ে যাচ্ছে।

মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, ক্রেডিট কার্ডে আড়াই লাখ টাকার ঋণ নিয়েছি। তাতে সার্ভিস চার্জ কাটা হয়েছে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা। তিনি বলেন, এবার বাকিটা বুঝে নেন বাস্তবে সুদের হার কত?

জানা গেছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ধরনের ঋণের সুদ ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য বিভিন্ন নীতি সহায়তাও দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরেও প্রকৃতপক্ষে ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামছে না।

বৈদেশিক বাণিজ্য (আমদানি) লেনদেনের ওপর ১৫ ধরনের কমিশন বা চার্জ আদায় করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- এলসি ওপেনিং কমিশন। এখানে আবার অনেক প্রকার-শতভাগ এফডিআর (স্থায়ী আমানত) রেখে সাইট এলসি খোলার জন্য দিতে হয় শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ কমিশন।

ব্যাক-টু-ব্যাক, এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) এবং বিভিন্ন অনুদান তহবিল থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রেও একই কমিশন দিতে হয় গ্রাহককে। তবে ডেফার্ড (বকেয়া) এলসির জন্য এ কমিশন আরও বেশি (শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ)।

এলসির সময় এবং পরিমাণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গ্রাহককে গুনতে হয় অতিরিক্ত কমিশন। বিদেশি এলসি হলে প্রতিবারে ৭৫০ টাকা এবং লোকাল হলে দিতে হয় ৩০০ টাকা। অ্যাড কনফার্মেশন চার্জ শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ।

এছাড়া সুইফট চার্জ অব এলসি ট্রানজেকশনের মধ্যে রয়েছে- প্রি-অ্যাডভাইস বিদেশি এলসির জন্য কমপক্ষে এক হাজার এবং লোকাল এলসিতে ৫০০ টাকা কমিশন দিতে হয়। এসব ঋণ পরিচালনার জন্য আবার আলাদাভাবে কমিশন দিতে হয় গ্রাহককে।

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে