ঢাকাঃ সিরামিক শিল্পসহ নামসর্বস্ব বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান খুলে বিনিয়োগের কথা বলে একাধিক ব্যাংক ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ফোশান গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এই অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জিয়াউদ্দিন ওরফে জামানকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (১১ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর উত্তরায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খান জানান, জিয়া উদ্দিন ওরফে জামান প্রতারণার মাধ্যমে সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখাতো। এভাবে তার প্রলোভনে পড়ে বিভিন্ন ব্যক্তি তাকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে।
জিয়া বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে এরই মধ্যে শত কোটির অধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই আত্মসাৎকৃত টাকাগুলো তিনি পাচারও করেছেন।
এ বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে বিস্তারিত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জিয়ার গ্রামের বাড়ি। রাজধানীর বনানীর ৪ নম্বর রোডে একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তিনি। তার ভুঁইফোঁড় ২০ শিল্প প্রতিষ্ঠানের মোট কর্মচারী ছয় থেকে সাতজন। তার ঠকবাজির ধরন অনেকটা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিমকেও হার মানায়। সাহেদের মতো সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেন জিয়া। টাইলস ব্যবসার বিশেষজ্ঞ হিসেবে একাধিক টেলিভিশনে টকশোতেও অংশ নিতেন।
ফোশান গ্রুপের ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারলে শুরুতেই চোখ আটকে যাবে নজরকাড়া এক টাইলসের বিজ্ঞাপনে। আদতে ক্রেতাদের মন ভোলাতে বিজ্ঞাপনে এমন চাকচিক্য। এই শিল্প গ্রুপ খুলে যিনি শিল্পপতি সেজেছেন, তিনি জিয়াউদ্দিন; কোম্পানিটির চেয়ারম্যান। আভিজাত্যের জানান দিতে হাঁকান দামি ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি, হাতে রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়ি। দুবাইয়ে তার সেকেন্ড হোম।
ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য দাবি করছে, কোম্পানিটির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ২০টির বেশি। তারমধ্যে রয়েছে- ফোশান সিরামিক কোম্পানি লিমিটেড, নিউ জঙ্গিয়ান সিরামিক কোম্পানি লিমিটেড, হাইটেক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেড, চায়না কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড, মেজর চায়না লিমিটেড, কাশফুল টয়লেট্রিস লিমিটেড, জিয়া অটো বাইকস, গ্রিন বায়োটেক লিমিটেড ও মেজর সফট টেক।
এমএম