Dr. Neem on Daraz
Victory Day

যৌতুকে দাবিতে কুলসুমকে পিটিয়ে হত্যা


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২০, ০৬:৫৭ পিএম
যৌতুকে দাবিতে কুলসুমকে পিটিয়ে হত্যা

ঢাকা : স্বামী, শাশুড়ি ও তিন বছরের পুত্র সন্তান ঈশালকে নিয়ে কুলসুমের সংসার ছিল সুখের। বিয়ের ৫ বছর পর থেকে স্বামী যৌতুক হিসাবে ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনে দিতে বলে স্ত্রীর কাছে। কুলসুমের বাবার পক্ষে এই ফ্ল্যাট কিনে দেওয়া সম্ভব ছিল না। এরপর থেকে স্বামী এমদাদ হোসেন ইমন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে কুলসুমের ওপর।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২৫ জানুয়ারি রাজধানীর মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টের ১২ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাড়ির ৬ষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটে কুলসুমকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় ইমন ও তার মা মনোয়ারা বেগম। এরপর তারা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রভাব বিস্তার করে পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।

শুক্রবার (৬ মার্চ) সেগুনবাগিচাস্থ ক্রাইম রিপোর্টার্স বহুমুখী সমবায় সমিতি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন নিহতের ছোট ভাই নিজাম উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন নিহতের ফুফাত ভাই তারেক ইমতিয়াজ খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ভগ্নিপতি সারোয়ার আহমেদ কাওসার ও নিহতের তিন বোন।

সংবাদ সম্মেলনে ইমতিয়াজ খান বলেন, ৫ বছর আগে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থানার লেসিয়ারা গ্রামের এমদাদ হোসেন ইমনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কুলসুমের। ইমন শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস বাংলাদেশের ডেপুটি ম্যানেজার ছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ইমন স্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নানা কূটকথা বলতে থাকে। এরপরই ফ্ল্যাট কেনার জন্য শ্বশুরের কাছে মোটা অংকের টাকা যৌতুক দাবি করে। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় সামান্য অজুহাতে কুলসুমকে অমানসিকভাবে মারধর করে আহত করতে থাকে এমদাদ। এর মাঝে কুলসুমের কোলে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম নেয়ায় শত নির্যাতনের পরও স্বামীর ঘর ছাড়তে রাজি হয়নি কুলসুম।

গত ২৩ জানুয়ারি কুলসুমকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফ্ল্যাটের মধ্যে বন্দী করে রাখা হয়। পরে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ সহায়তা নিয়ে ইমনকে বাড্ডা থানা পুলিশ আটক করে। পরে থানায় দুই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হয়। ইমন পুলিশের কাছে মুচলেকা দেয় যে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাবে না। কিন্তু বাসায় ফিরে গিয়ে পরদিন থেকে ইমন কুলসুমের ওপর মারপিট করে। কেন পুলিশকে জানানো হলো-এই কথা বলেই বেল্ট দিয়ে কুলসুমকে বেদম মারপিট করে।

এক পর্যায়ে ২৫ জানুয়ারি সকালের কোনো এক সময়ে কুলসুম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর লাশ ফ্ল্যাটের ভিতর ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ইমনসহ অন্য আসামিরা জামিনে বেরিয়ে মামলার বাদিসহ নিহতের পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। একই সাথে তারা কুলসুমের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে যাতে হত্যার কথা না দিয়ে আত্মহত্যা উল্লেখ করা হয় তার জন্য অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই অবস্থায় উম্মে কুলসুম হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তুমূলক বিচার ও আসামিদের দেয়া হুমকি থেকে রেহাই পেতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। 


আগামীনিউজ/সুমন/মামুন

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে