পাবনাঃ পাবনার সাঁথিয়ায় দুই চেয়ারম্যানের পূর্ব বিরোধের জের ধরে দু'পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল আটটার দিকে সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাগডেমড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান এবং সাবেক চেয়ারম্যান ও নাগডেমরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদের মধ্যে র্দীঘদিন ধরে হামলা, মামলার বিরোধ চলে আসছিল। হাফিজ চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকরা দীর্ঘদিন গ্রাম ছাড়া ছিল।
চেয়ারম্যান হাফিজ রবিবার সকালে গ্রামছাড়া সমর্থকদের নিয়ে বাড়িতে আসেন। এ খবর জানার পর সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
এ নিয়ে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১০-১২টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। এ খবর পেয়ে সাঁথিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হন। আহতদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন, হাবিল উদ্দিন, আব্দুল মতিন, হাসান আলী, মিজানুর রহমান, শিহাব আলী, সুমন আহমেদ টুকু, রাকিব হোসেন, বুলবুল হোসেন, আবু দায়েন, আব্দুস সামাদ, ফজর আলী।
এ বিষয়ে নাগডেমড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের অত্যাচারে আমি ও আমার সমর্থকরা দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলাম। রোববার আমি ও আমার সমর্থকরা গ্রামে আসলে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ ও তার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং মরধর করেন। আমি এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমানকে দায়ী করে নাগডেমড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, হাফিজ চেয়ারম্যান তার সমর্থকদের সাথে করে নিয়ে রবিবার গ্রামে এসে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট এবং মারপিট করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, নাগডেমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক চেয়ারম্যানের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এলকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি।
উল্লেখ্য, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ও সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতিপর্বেও কয়েক দফা হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শাহিন/এমআইসি