Dr. Neem on Daraz
Victory Day

শীতের আমেজে ঘরে ঘরে ‘কুমড়ো বড়ি’ তৈরির হিড়িক


আগামী নিউজ | বেনাপোল প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৩, ০৬:১৩ পিএম
শীতের আমেজে ঘরে ঘরে ‘কুমড়ো বড়ি’ তৈরির হিড়িক

যশোরঃ বেনপোল শার্শার নারীরা ডালের বড়ি তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীত মৌসুমে বেনাপোল শার্শার প্রতিটি ঘরে কলাই আর চাল কুমড়া দিয়ে বড়ি বানানোর ধুম পড়ে যায়। হাতে তৈরি বড়ি খেতে অনেক সুস্বাদু। গ্রামবাংলার খাদ্যের প্রাচীনতম ঐতিহ্যটি এখনো  টিকে আছে যশোর অঞ্চলে।

 গ্রামবাংলায় ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে মাইস কলাইয়ের ডাল ও চালকুমড়ার তৈরি বড়ি। শীত মৌসুম মানেই গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে নতুন নতুন খাবার তৈরির মৌসুম। শীতের পিঠা-মিঠাই-খির-পায়েশের পাশাপাশি ডালের তৈরি বড়িও একটি সুস্বাদু খাবার। বড়ি তৈরির উপকরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয় কালো কলাই (ঠিকরি কলাই) ও চালকুমড়া। 

অনেকে কুমড়া ছাড়াও মুলা অথবা পেঁপেকে ব্যবহার করে থাকে। কলাই পাথরের জাঁতায় মাড়াই করে সূক্ষ্মভাবে পরিষ্কার করে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। এর সাথে যোগ হয় পাকা চালকুমড়া, মুলা কিংবা পেঁপে। চালকুমড়ার ভেতর থেকে তার মূল উপাদান কুরায়ে বের করা হয়। এরপর উভয় উপাদান এক করে ঢেঁকি বা জাঁতায় পিষে পেস্টের মতো তৈরি করা হয়।

এখন ঢেঁকি জাঁতার অভাবে রাইস মিলে গিয়ে কম পরিশ্রমে মাড়ায় করে আনা হয় ডাল। এক সময় এই উপাদান তৈরিতে নারীদের  বেশী পরিশ্রম করতে হতো।

শীতের সময় গ্রামাঞ্চলে সন্ধার পর ঢেঁকির ধপধপ শব্দ শোনা যেত । কিন্তু ঢেঁকি ব্যবহার কমে যাওয়ায় অনেকে মিল বা ইঞ্জিনচালিত মেশিনে বড়ি কোটে।

রাতে কুটা কলাই-কুমড়ার মণ্ড পাত্র করে সারারাত শীতের শিশিরে রাখা হয়। পরের দিন ভোরে গৃহিণীরা একত্রিত হয়ে বসে যান বড়ি দেওয়ার কাজে। কাঠ,নেট বা বাঁশের মাচার ওপর পরিষ্কার কাপড় বিছিয়ে তার উপর ধীরে ধীরে ডান হাতের মুঠোয় বসানো হয় বড়ি। হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তারা বিশেষ কৌশলে বড়ি তৈরি করেন। এরপর কাঁচাবড়ি শীতের রোদে শুকানো হয়। বড়িগুলো যেন দেখা যায় তারার মতো ফুটে আছে। পরিষ্কার আবহাওয়া এবং তীব্র শীতে বড়ি বানালে সেই বড়ি স্বাদযুক্ত হয় বেশি। 

সামটা গ্রামের রাবেয়া বলেন,কুমড়া বড়ি আমার বিরাট পছন্দ।তরকারিতে কুমড়োর বড়ি দিলে আমার আর মাছ টাছ লোগে না।

শার্শা পাইলট স্কুলের শিক্ষিকা শিল্পী খাতুন বলেন,আমি প্রতি বছর এই কুমড়ার বড়ি তৈরী করে সংরক্ষন করে রাখি ।আমার বাচ্চারা এই বড়ি খুব পছন্দ করে।আগে আমার মা চাচিরা শীলে(পাটায়)বেটে বড়ি তৈরী করতো অনেক কষ্ট হত।এখন আর এতো কষ্ট হয় না।এখন মেশিনে ডাইলের পেস্ট তৈরী করে দ্রুত বড়ি তৈরী করা যায়।

টেংরা গ্রামের রাইস মিলের মালিক লিয়াকত আলী বলেন,আগে মানুষ হাতে বেটে বড়ি তৈরী করতো।আর এখন প্রযুক্তির ব্যবহারে মানুষের কাজ সহজ হয়েছে।তাই এখন এই বড়ি তৈরীর মৌসুমে ভোর হলেই মহিলা চলে আসছে ভিজানো কলাই ডাইল নিয়ে।এটা করে আমাদেরও দুপয়সা ইনকাম হচ্ছে।

মনির হোসেন/এমআইসি

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে