Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বেনাপোল-শার্শায় পেঁয়াজের বাজার অস্তির হয়ে উঠেছে, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস


আগামী নিউজ | উপজেলা প্রতিনিধি, বেনাপোল (যশোর) প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৩, ০১:০১ পিএম
বেনাপোল-শার্শায় পেঁয়াজের বাজার অস্তির হয়ে উঠেছে, ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

যশোরঃ বেনাপোল ও শার্শায় পেঁয়াজের বাজার আবারও অস্তির হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দুই সপ্তাহ ব্যবধানে ৩৫ টাকা কেজির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকাই এমন অবস্থা হচ্ছে। আমদানি বন্ধের অজুহাতে বেনাপোল-শার্শায় বেড়েই চলেছে দেশী পেঁয়াজের দাম।

এদিকে, এলসি বন্ধ থাকার কারণে বাজার ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে, বলছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজ আমদানি না করা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলেও জানাচ্ছেন তারা।

বেনাপোল, শার্শা, নাভারন, বাঁগআচড়াসহ সীমান্ত এলাকার বাজারগুলোতে দুই সপ্তাহ ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। এর আগে প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। কোনো কিছুকেই পেঁয়াজের দাম কমছে না। ব্যবসায়ীরা বলছে দাম আরো বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। ৫০ টাকার নিচে কেজিতে কোনো সবজি মিলছে না বাজারে।

শনিবার সকালে বেনাপোল-শার্শার বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়। হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। আমদানি হলে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কমে আসবে, বলছেন আমদানিকারকরা।

ক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের দাম যেভাবে বাড়ছে এতে ক্রমেই পণ্যটি সাধারণ ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। দাম বাড়ার পেছনের স্থানীয় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন ক্রেতারা। এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ চান তারা।

বেনাপোল বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মুজিবর রহমান বলেন, আমদানি নেই। চাহিদা বেশি। তাই দাম বাড়ছে। বেশি দামেও পেঁয়াজ মিলছে না।
তিনি বলেন, এলসি বন্ধ হওয়ার আগে বেনাপোল ও ভোমরা বন্দর দিয়ে যে এলসির পেঁয়াজ আসতো এর সিংহ ভাগই খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা এলাকার চাহিদা পূরণ করতো। এলসি বন্ধ থাকার কারণে বাজার ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। পেঁয়াজ আমদানি না করা পর্যন্ত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। 

বেনাপোল বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন সেলিম রেজা। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহেই পেঁয়াজ দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি কিনেছি। আজ বাজারে এসে দেখি ৭৫ টাকা।

তিনি বলেন, এসময় পেঁয়াজের একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়। প্রতিবছরই এমন সময় দাম বাড়ে। সরকারের কাছে অনুরোধ, এগুলোকে কঠোর হাতে দমন করা হোক।

নাভারন বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনলেন আহম্মদ আলী শাহিন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই তো তিন-চার টাকা করে দাম বাড়ছে। এখন তো দেখছি পেঁয়াজ কেনাই যাবে না। প্রতিদিন অল্প অল্প করে কিনছি। দাম একটু কমলে বেশি পরিমাণে কিনবো।

বেনাপোলের খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, দুই সপ্তাহ আগে পাইকারি পেঁয়াজ কিনেছি ৪০-৪২ টাকা কেজি দরে। তখন বিক্রি করেছি ৪৩-৪৫ টাকা কেজি। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে দাম বেড়ে হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। এখন বিক্রি করছি ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মন্ডল বলেন, পেঁয়াজের দাম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসব পেঁয়াজ আসছে। এখন চাষির ঘরে ৩০ শতাংশ ও ব্যবসায়ীদের কাছে ৭০ শতাংশ পেঁয়াজ আছে। চাষিরা ৬২-৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করছেন। বিক্রেতারা এটা ৭৫-৮০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন।

তিনি বলেন, বেশি দামের কারণে চাষিরা বেশি না ছেড়ে অল্প অল্প করে বিক্রি করছেন। ভোক্তারা একটু কষ্ট পেলেও চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। আশা করছি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দাম কমে আসবে।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, গত ১৫ মার্চ থেকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ইমপোর্ট পারমিট বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। যার কারণে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না। সামনে কোরবানি ঈদ। এই দিনে পেঁয়াজের প্রয়োজন বেশি হয়। সরকার যদি ইমপোর্ট পারমিট দেয় তাহলে পেঁয়াজ আমদানি হবে এবং দাম অনেকটাই কমে আসবে।

মোঃ মনির হোসেন/বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে