ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর উপহার দেওয়া সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির স্বৈরশাসনের সময় বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে অনেক ফুটবল খেলা হয়েছে। সেই ফুটবল খেলা বন্ধ করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এখন বাংলাদেশে সাংবিধানিক পন্থায় নির্বাচন হবে।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিকেদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় আইনমন্ত্রী আরও বলেন, 'আপনারা জানেন এক সময় নির্বাচনের আগে কেয়ারটেকার সরকার ছিল। যখন এই কেয়ারটেকার সরকারের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে একটা মামলা হলো। হাইকোর্ট রায় দিল কেয়ারটেকার সরকারের কোনো বৈধতা নাই, এটা বেআইনি। পরে এই মামলা হাইকোর্টে গেলে হাইকোর্টের আপিল বিভাগও রায় দেয় এই কেয়ারটেকার সরকার অবৈধ। সেই রায় ১৫তম সংশোধনীতে সংসদেও পাস হয়। সেখানে কেয়ারটেকার সরকার অবৈধ ও কেয়ারটেকার সরকার বলে যে একটা ব্যবস্থা ছিল সেটা বাতিল করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের যে সংবিধান উপহার দিয়েছেন সেই মোতাবেক নির্বাচন এবং সেই মোতাবেক বাংলাদেশ চলবে। সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোনো নির্দলীয় সরকার, কোনো কেয়ারটেকার সরকার থাকবে না। নির্বাচন করবেন নির্বাচন কমিশন। পরিষ্কারভাবে সংবিধানে বলা আছে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য ক্ষমতা থাকবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। এভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হয়ে আসছে এং আগামীতেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।'
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিএনপির মহাসচিক মির্জা ফখরুল মন্তব্য করেছেন বর্তমানে দেশে আইনের শাসন ও সুশাসন নেই। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির পিতাসহ তার পরিবারকে হত্যা করা হয়েছিল এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচার করা যাবে না বলে ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর আইন পাস করেছিল খন্দকার মোস্তাক ও জিয়াউর রহমান। সেটাকে আইনের শাসন মনে করে বিএনপি। আর আমরা মনে করি আইনের ঊর্ধ্বে কেউ না। আইন যেভাবে লেখা আছে সেইভাবেই জনগণকে ধারণ করতে হবে। আমরা মনে করি সেটাই আইনের শাসন। এখন আইনের শাসন আছে এবং দেশে কোনো নৈরাজ্য নেই। হত্যার বিচার হয় না এমন কথা কেই বলতে পারবে না। বিএনপি জিয়াউর রহমান হত্যার বিচার করতে পারে নাই। তাদের মুখে আইনের শাসনের কথা মানায় না। এই যে তারা বক্তৃতা দিচ্ছে কথা বলছে আমরা তো তাদের বাধা দিচ্ছি না। কারণ এটা তাদের অধিকার। আর এটাই হলো গণতন্ত্র। তাদের আমলে আইনের শাসন ছিল না। কথা বলা যেত না, এমনকি হত্যাকারীও বেঁচে যেত। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল তাদেরকে তারা চাকরি দিয়ে পুনর্বাসন করেছিল। তাদের বিরোধী দলীয় নেতা বানানো হয়েছিল। আমাদের সময়ে আইনের বইয়ে যা লেখা, জনগণকে তা পালন করতে হয়। সরকার তা পালন করে।
পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা দেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিল খলিফা কাজল, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম ভূঁইয়া, মনির হোসেন বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন খাদেম লিটন, উপজেলা যুবলীগ নেতা আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শাখায়াত হোসেন নয়ন, সহ-সভাপতি সৈয়দ যুবরাজ শাহ রাসেল প্রমুখ।
বুইউ