Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আইনস্টাইনও ইভিএম মেশিনে ফলাফল পাল্টাতে পারবে না : সিইসি


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, পাবনা প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩, ০২:৪৯ পিএম
আইনস্টাইনও ইভিএম মেশিনে ফলাফল পাল্টাতে পারবে না : সিইসি

পাবনাঃ ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। বিগত ১০ মাসে এ ধরনের কোনো বস্তুনিষ্ঠ অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনে প্রথম যখন আসি তখন আমিও মনে করতাম হয়তো এই মেশিনে ভোট চুরি করা যায়। কিন্তু এরপর পরীক্ষা করতে থাকি। দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা করেছি। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে তাদের মেশিন দিয়ে বললাম আমাদের দেখিয়ে দেন কারচুপি কীভাবে করা সম্ভব। কিন্তু তারা দেখাতে পারেননি। গত ৯-১০ মাসে নির্বাচনেগুলাতে কােনো বস্তুনিষ্ঠ অভিযোগ পাইনি। আবার বলা হলো- শেষের ১০ মিনিটে ফলাফল পাল্টিয়ে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু এই ১০ মিনিটে যদি একজন আইনস্টাইনকেও বসিয়ে দেওয়া হয় তারাও ফলাফল পাল্টাতে পারবে না। এটা সম্ভব না।’

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত ‘নির্বাচনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের চ্যালেঞ্জসমূহ এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘ইভিএমের ভালো দিক হলো নিরাপত্তা। ভোটের নিরাপত্তা, যেমন আমার ভোট আমি দেব অন্য কেউ যাতে কেড়ে নিয়ে সিল মেরে দিতে না পারে। কারণ ভোটাররা না গেলে ফিঙ্গার প্রিন্ট না মিললে ডিজিটাল ব্যালট ওপেন হবে না। কিন্তু আমাদের বড় একটা অংশ দাঁড়িয়ে গেল ইভিএমের বিপক্ষে। তারা বলতে লাগলেন, এটা ভোট চুরির মেশিন।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগ ও প্রশাসনের আন্তরিকতা দরকার। ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারছেন সেটার পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের। আমাদেরও প্রচেষ্টা আছে যে নির্বাচন কমিশনকে আস্থার জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। আমি বিশ্বাস করি ইভিএমে এখন অনেকের আস্থা এসে গেছে। আগে যে অনাস্থা ছিল গালমন্দ করা হতো এখন অতটা গালমন্দ করা হয় না। কারণ এখন পর্যন্ত কেউ নির্বাচন কমিশনে অথবা আদালতে প্রমাণ দেখাতে পারেননি যে এটাতে কারচুপি হয়েছে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে  জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে বোঝাপড়ায় ফাঁক থাকলে, নির্বাচনে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে, সে নির্বাচন প্রত্যাশিত মাত্রায় অংশগ্রহণমূলক বলা যাবে না। সে নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমরা স্বস্তিদায়ক ও সহজভাবে নির্বাচন আয়োজন করতে চাই। সেজন্য আমরা প্রত্যাশা করি, দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাদের মধ্যে মোটাদাগে বোঝাপড়া থাকে তাহলে ভালো নির্বাচন উপহার দিতে পারব। রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে যদি কোনো বোঝাপড়ার ফাঁক থাকে তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করুন। সবার সহযোগিতায় সব রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে জনগণের কাছে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চেষ্টা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যাশা করি বড় রাজনৈতিক দলগুলো যেন নির্বাচনে অংশ নেয়। প্রশাসন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব। নির্বাচনের মতো বৃহৎ কর্মযষ্ণ কেবল একক কোনো সংস্থার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে হবে। নির্বাচনের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বজায় রাখতে এবং ভোট কেন্দ্রে সব ধরনের অনিয়ম রোধ করতে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।’

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফর উল্লাহর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল বাতেন, পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন, পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলা ও উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে