রংপুরঃ নগরীর মধ্য গণেশপুর এলাকায় দুই বোনকে হত্যার দায়ে মাহফুজার রহমান রিফাত (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই মামলায় অপর আসামি রিফাতের সহযোগী আরিফুল ইসলাম আরিফের (২৭) সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রিফাত নগরীর বাবুখা মধ্যপাড়া মহল্লার এমদাদুল হকের ছেলে এবং আরিফ রংপুর সদর উপজেলার শাহাবাজপুর কলার খামার এলাকার মহুবুল ইসলামের ছেলে।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে কেউ না থাকার কারণে মধ্যগণেশপুর এলাকার মমিনুল ইসলামের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মীম (তৎকালীন বয়স ১৭) তার চাচাতো বোন জান্নাতুল মাওয়াকে (১৪) নিজের কাছে থাকার জন্য নিয়ে আসেন। প্রেমের সম্পর্কের জেরে ওই রাতে সুমাইয়া আক্তার মীমের বাড়িতে যান নগরীর মুলাটোল মদিনাতুল উলুম কামিল (এমএ) মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র রিফাত। এসময় মীমের সঙ্গে শারীরিক মিলন হয় রিফাতের। পরে দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটির জেরে তাকে হত্যা করেন রিফাত। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ঘরের সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে মরদেহ ঝুঁলিয়ে রেখে আত্মহত্যার নাটক সাজায় রিফাত।
এসময় মীমের চাচাত বোন জান্নাতুল মাওয়া ঘটনা টের পেয়ে গেলে তাকেও শ্বাসরোধে হত্যার পর আয়নার ভাঙা কাচ দিয়ে গলায় আঘাত করে মেঝেতে ফেলে পালিয়ে যান রিফাত।
এ ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর ঘটনাস্থল থেকে দুই বোনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন মীমের বাবা মমিনুল ইসলাম। পরে ২০ সেপ্টেম্বর রিফাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রিফাত আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দায় স্বীকার করেন।
তদন্ত শেষে রিফাত ও আরিফের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মজনু মিয়া ও আল-আমিন।
২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি খন্দকার রফিক হাসনাইন বলেন, এ মামলার আসামি মাহফুজার রহমান রিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর আসামি আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ মামলার আলামত নিজ দখলে রেখে এবং প্রধান আসামিকে আলামত গোপনে সহযোগীতার করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় সাত বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। এছাড়া আরিফের বিশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রফিক হাসনাইন বলেন, আমরা মনে করি ন্যায়বিচার পেয়েছি। এ রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি
বুইউ