Dr. Neem on Daraz
Victory Day

একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন বাবা-ছেলে


আগামী নিউজ | জেলা প্রতিনিধি, নাটোর প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০১:০১ পিএম
একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন বাবা-ছেলে

নাটোরঃ বাবা ইমামুল ইসলাম ও তার ছেলে আবু রায়হান এবার একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের একই কক্ষে বাবা এবং ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।

তাদের বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার পাকা ইউনিয়নের চকতকিনগর গ্রামে।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে প্রকাশিত ফলাফলে বাবা ইমামুল ইসলাম পেয়েছেন জিপিএ ৪.৭৯ এবং ছেলে আবু রায়হান পেয়েছে ৪.৮২। ইমামুল ভোকেশনাল শাখার ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেড থেকে পরীক্ষা দেন। আর রায়হান পরীক্ষা দেয় জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ট্রেড থেকে।

জানা গেছে, পড়ালেখার অনেক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সংসারে অভাব-অনটনের কারণে অষ্টম শ্রেণি পাসের পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি ইমামুলের। পড়ালেখা ছেড়ে জীবিকার তাগিদে ২৪ বছর আগে তিনি ঢাকায় পাড়ি জমান। সেখানে প্রায় ১৮ বছর গার্মেন্টসে শ্রমিকের কাজ করেন।

২০১৬ সালে সেই কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসেন। সেই সময়ে জমানো টাকা দিয়ে আমের ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি বাড়ির পাশে একটি ছোট্ট মুদির দোকান দেন। কিন্তু বুকের ভেতরে লেখাপড়া করতে না পারার চাপা কষ্ট মাঝে মধ্যেই তাকে পীড়া দিত। লোকলজ্জায় সেটিও হয়ে উঠছিল না। পরে পারিবারিক সিদ্ধান্তে সেই ইচ্ছা পূরণে ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডে ভর্তি হন। আর ছেলে রায়হান ভর্তি হয় একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একই শ্রেণির জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কস ট্রেডে।

বাবা ইমামুল ইসলাম বলেন, সমাজে আর ১০টা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যেন পরিচয় দিতে পারি, সেই উদ্দেশ্যেই দীর্ঘ ২৪ বছর পর আবার লেখাপড়া শুরু করি। পড়ালেখায় শিক্ষকদের পাশাপাশি ছেলের সহযোগিতা নেই। ২০২০ সালে ছেলের সঙ্গে বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভোকেশনাল শাখার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। এবার পাস করলাম। এখন পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।

ছেলে আবু রায়হান বলেন, বাবা আর আমি একই শ্রেণিতে পড়ায় প্রথম দিকে লজ্জা পেলেও বাবার ইচ্ছার কারণে এখন আর কিছু মনে হয় না। বরং এখন গর্ব হয়। তাছাড়া একইসঙ্গে দুজনে পড়ার টেবিলে বসে পড়তেও বেশ ভালো লাগে।

সে আরও বলে, ‘বাবা পাস করায় আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। ভবিষ্যতেও আমরা একসঙ্গে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চাই।’

বাগাতিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোছা. সামসুন্নাহার বাবা-ছেলের একসঙ্গে পাসের খবরে তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বুইউ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে