ফরিদপুরঃ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের অধ্যুষিত এলাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় কোমরপুরের আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে সমাবেশ শুরু হয়।
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশের ২ থেকে ৩ দিন আগেই পাঁচটি জেলার বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে অবস্থান নেন। অনেকেই বাড়ি থেকে চিড়া মুড়ি কলা নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। মাঠের মধ্যে তাঁবু টাঙিয়ে চলে আড্ডা ও স্লোগান। মধ্যরাতে ওই তাঁবুর নিচেই ঘুমিয়ে রাতযাপন করেন হাজারও নেতাকর্মী। অনেকে চাদর, কাঁথা ও বিছানা নিয়ে রাত কাটান। এছাড়া স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠান-বারান্দাতেও রাত কাটান সমাবেশে আগত নেতাকর্মীরা।
এর পূর্বে ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশেও একই চিত্র দেখা গেছে।
বিএনপিকে ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশটি করার জন্য শহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবশেষে শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়।
ফরিদপুর মহানগরের আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম বলেন, সমাবেশে যেন সফল না হয় সেজন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু কোনো প্রতিবন্ধকতাই সমাবেশকে ঠেকাতে পারবে না। এত প্রতিবন্ধকতার পরেও সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণ এই সরকার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা এ সরকারের পতন চায়।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সমাবেশকে প্রতিবন্ধকতার চেষ্টা করছে সরকার। আমাদের বিগত পাঁচটি বিভাগীয় সমাবেশ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে অত্যন্ত নার্ভাস ফিল করছে সরকার।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে শামা ওবায়েদ বলেন, ফরিদপুর বিভাগকে তারা নিজেদের বিভাগ বলে মনে করে। কিন্তু আমরা দেখছি ফরিদপুর বিভাগীয় অসম্ভব রকম সারা পড়েছে। প্রতিটি জেলা থেকে সমাবেশস্থলে সাধারণ জনগণ এবং আমাদের সহযোদ্ধারা আসতে শুরু করেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত, সাধারণ জনগণও বিএনপি নেতৃত্বে জেগে উঠেছে। সেটা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এ সমাবেশ সাধারণ জনগণ শতভাগ সফল করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সমাবেশ উপলক্ষে যে সারা দেখতে পাচ্ছি তাতে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে।
শনিবার ফরিদপুরের এই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন।
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে দলটি।
এরই অংশ হিসেবে ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় এবং ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে গণসমাবেশ করবে দলটি। সবশেষ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
বুইউ