খুলনাঃ নছিমন-করিমন-ভটভটিসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে খুলনায় দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। এতে দূর-দূরান্তের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
সব পথে গাড়ি বন্ধের ঘোষণা থাকলেও ঢাকা-খুলনা রুটের বাস যশোর ও গোপালগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। সাতক্ষীরামুখী যেসব বাস যশোর হয়ে চলে, সেগুলো চলবে। তবে যেগুলো খুলনা হয়ে চলে সেগুলো বন্ধ থাকবে। মূলত খুলনায় কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে ও খুলনা থেকে বিভিন্ন রুটে গাড়ি ছেড়ে যাবে না এ দুই দিন।
সাধারণ যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেছেন, বিরোধী দলের কর্মসূচি বানচাল করতে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে জনগণকে জিম্মি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, পরিবহন ধর্মঘট ডেকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও নৌপথে সকল বাহন বন্ধ করে দিলেও শনিবারের খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এসএম শফিকুল আলম মনা বলেন, শনিবার (২২ অক্টোবর) নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমসবেশে যাতে নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে না পারে এ কারণে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া কোনো কারণ ছাড়াই নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের আটক করে সমাবেশ বানচাল করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করা হবে। সমাবেশ হবে জনসমুদ্র।
বিএনপির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বলেন, মাগুরাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে খুলনায় চলে এসেছেন। সমাবেশ সফল হবে।
তবে খুলনা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচলের প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে প্রয়োজনে সময় আরও বাড়তে পারে।’
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, ‘বাস মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের সঙ্গে শ্রমিক ইউনিয়ন একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সে কারণে আমরাও কোনও গাড়ি চালাবো না।’
এর আগে বুধবার (১৯ অক্টোবর) খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির জরুরি সভায় পরিবহন ২ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমিতির কর্মকর্তা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও মালিকদের উপস্থিতিতে সভায় বলা হয়, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে নসিমন-করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিটিআরসির গাড়ি চলাচল করছে। অবৈধ নছিমন-করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিটিআরসির যত্রতত্র কাউন্টার বন্ধের দাবিতে ২১-২২ অক্টোবর পর্যন্ত দুই দিন মালিক সমিতির সকল গাড়ি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এমএম